Business News

মোরাটোরিয়ামের ২৪ ঘণ্টা আগেই ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে ২৬৫ কোটি টাকা তুলেছিল গুজরাতের সংস্থা

বদোদরা পুরসভার উপ-পুর কমিশনার এবং এসপিভি-র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুধীর পটেল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বদোদরা (গুজরাত) শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ১৪:১৪
Share:

ইয়েস ব্যাঙ্কের উদ্বিগ্ন আমানতকারীরা। ছবি- পিটিআই।

ধুঁকতে থাকা ইয়েস ব্যাঙ্কের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) পুনরুজ্জীবনের প্যাকেজ (‘মোরাটোরিয়াম’) ঘোষণার দু’দিন আগেই ওই ব্যাঙ্কে জমা রাখা ২৬৫ কোটি টাকা তুলে নিয়েছিল গুজরাতের একটি সংস্থা। ‘বদোদরা স্মার্ট সিটি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ভিএসসিডিএল)’। এই সংস্থার সঙ্গে বিশেষ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প (‘স্পেশাল পারপাস ভেহিক্যাল’ বা, ‘এসপিভি’) যৌথ ভাবে করে বদোদরা পুরসভা। পুরসভার উপ-পুর কমিশনার এবং এসপিভি-র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুধীর পটেল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

এই ঘটনার সূত্রেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ইয়েস ব্যাঙ্ক যে এই পরিস্থিতিতে পড়তে চলেছে, তার খবর কি আগেই রাজনীতিকদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁদের ‘ঘনিষ্ঠ’ মহলে? বিপদ থেকে বাঁচার জন্য কি তাই কেউ কেউ আপৎকালীন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? একই অভিযোগ উঠেছিল চার বছর আগে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দি ঘোষণার পর। যখন দেখা গেল, কালো টাকা উদ্ধারে নোটবন্দি চালু হলেও, কালো টাকা উদ্ধার হয়েছিল নামমাত্রই।

বদোদরা পুরসভার উপ-পুর কমিশনার এবং এসপিভি-র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুধীর পটেল শনিবার জানিয়েছেন, যে ২৬৫ কোটি টাকা আরবিআইয়ের মোরাটোরিয়াম ঘোষণার আগেই গুজরাতের সংস্থাটি ইয়েস ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখা থেকে তুলে নিয়েছিল, বদোদরা শহরে স্মার্ট সিটি গড়ার জন্য কেন্দ্র সেই টাকাটা অনুদান দিয়েছিল। পুরো অর্থটাই জমা রাখা হয়েছিল বদোদরা শহরে ইয়েস ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায়। টাকাটা তুলে নেওয়া হয় গত মঙ্গলবার। তার দু’দিনের মাথায়, গত বৃহস্পতিবার মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করে আরবিআই। আমানতকারীদের টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা ৫০ হাজার টাকা বেঁধে দেওয়া হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন- ইয়েস ব্যাঙ্কের ৪৯ শতাংশ মালিকানা কিনে নিচ্ছে স্টেট ব্যাঙ্ক

আরও পড়ুন- করোনা, ইয়েস ব্যাঙ্কের খবরে প্রভাব শেয়ার বাজারে, সেনসেক্স পড়ল ১০০০ পয়েন্ট

ভিএসসিডিএল সূত্রের খবর, গত নভেম্বরেই ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়ে তা ব্যাঙ্ক অফ বরোদার স্থানীয় শাখায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তার পরের তিন মাসে সে ব্যাপারে সংস্থাটি এক পা-ও এগতে পারেনি মূলত বদোদরা পুরসভা কর্তৃপক্ষেরই একাংশের অনাগ্রহে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, ভিএসসিডিএল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ইয়েস ব্যাঙ্কের এই পরিস্থিতির কথা গত নভেম্বরে জানতে পেরেছিলেন। তাই ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে তাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্যাঙ্ক অফ বরোদায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন।

বদোদরা পুরসভার উপ-পুর কমিশনার পটেল জানিয়েছেন, ইয়েস ব্যাঙ্কের বদোদরা শাখা থেকে টাকাটা তুলে নিয়ে তা জমা করা হয় ব্যাঙ্ক অফ বরোদার স্থানীয় শাখায়। তার জন্য ওই ব্যাঙ্কে একটি নতুন অ্যাকাউন্টও খোলা হয়।

কেন বদোদরা পুরসভার উন্নয়নমূলক বহু যৌথ প্রকল্পের অংশীদার ‘ভিএসসিডিএল’ গোড়া থেকেই ওই টাকাটা রেখেছিল ইয়েস ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায়?

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বদোদরা পুরসভার এক কর্তা জানাচ্ছেন, তার কারণ একটাই। অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির তুলনায় অনেক বেশি সুদ দিত বেসরকারি ইয়েস ব্যাঙ্ক। তাই ২০১৭ সালে ভিএসসিডিএল-এর গোড়াপত্তনের পরেই কেন্দ্রীয় অনুদানের ২৬৫ কোটি টাকা অন্য কোনও ব্যাঙ্কে জমা না রেখে, তা ইয়েস ব্যাঙ্কের বদোদরা শাখায় রাখা হয়েছিল।

তবে ইয়েস ব্যাঙ্কের সমস্যার কথা রাজনীতিকদের মাধ্যমে তাঁদের ‘ঘনিষ্ঠ’মহলে ছড়িয়ে পড়ার যে অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক মহলে, তা আরও জোরদার হয়েছে এমন আরও একটি ঘটনা সম্প্রতি সামনে আসায়। ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে গত অক্টোবরেই ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার আমানত তুলে নিয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের ‘তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম’ নামে একটি সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন