জলের তলায় রাস্তা। যাতায়াতে ভরসা নৌকাই। শনিবার শ্রীলঙ্কার মলওয়ানায়। ছবি: রয়টার্স।
ঘূর্ণিঝড় দিটওয়ার দাপটে লন্ডভন্ড শ্রীলঙ্কা। দুর্যোগের জেরে সে দেশে হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১২৩ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে প্রশাসন। খোঁজ নেই ১৩০ জনের। প্রবল ঝ়ড়বৃষ্টিতে বহু জায়গার দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সেই সমস্ত জায়গাতে উদ্ধারকাজ শুরু হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল অতুলা করুণানায়েকে শনিবার জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়়টি শ্রীলঙ্কা ছাড়িয়ে ভারতীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ভারতের মৌসম ভবন জানিয়েছে, রবিবার ভোরে দিটওয়া তামিলনাড়ু-পুদুচেরী-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের কাছে আছড়ে পড়তে পারে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই দুর্যোগের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে ঝড়বৃষ্টিও। তামিলনাড়ুর কয়েকটি জেলায় চূড়়ান্ত (লাল) সতর্কতা রয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি শ্রীলঙ্কার উপকূল ধরে উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। গত ছ’ঘণ্টায় তার গতি কিছুটা বেড়েছে। ঘণ্টায় আট কিলোমিটার বেগে ভারতের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়।
শ্রীলঙ্কার স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে দেশের পূর্ব এবং মধ্যাঞ্চল। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, বহু মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন। তাঁদের উদ্ধারের কাজ চলছে। শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিম দিকের প্রদেশের কালাওয়া এলাকায় একটি বাসের মধ্যে ৬৮ জন আটকে পড়েন। প্রবল জলস্রোতে বাসটি ভেসে গিয়েছিল। প্রাণ বাঁচাতে যাত্রীরা ২৯ ঘণ্টা বাসের ছাদে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যেরা গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
বিপর্যয়ের সময় পড়শি শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করতে ‘অপারেশন সাগর বন্ধু’ শুরু করেছে নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যেই সি-১৩০ এবং আইএল-৭৬ বিমানে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে ত্রাণসামগ্রীও।