National News

ডোকলাম প্রশ্নে সংযমী থেকেও নাম না করে চিনকে খোঁচা দলাই লামার

ভারত এবং চিনের মধ্যে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ডোকলামকে কেন্দ্র করে যে টানাপড়েন চলছে, সে প্রসঙ্গে বুধবারই দলাই লামা প্রথম বার মুখ খুললেন। তিনি বললেন, ‘‘এটা খুব বড় বিষয় নয়, ভারত এবং চিনকে পাশাপাশিই থাকতে হবে।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ১৬:১০
Share:

ডোকলাম নিয়ে মন্তব্য করা থেকে দলাই লামা বিরতই ছিলেন। বুধবার মুখ খুললেন, কিন্তু সংযমের সঙ্গে। ছবি: পিটিআই।

ডোকলামের সঙ্কট এমন কিছু বড় বিষয় নয়, মন্তব্য দলাই লামার। তিব্বতিদের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা মনে করিয়ে দিলেন, ভারত এবং চিনকে পাশাপাশিই থাকতে হবে, সুতরাং বিরোধ মিটিয়ে নেওয়াই ভাল।

Advertisement

তবে, এরই পাশাপাশি চিনকে কটাক্ষ করতে অবশ্য ছাড়েননি বৌদ্ধ ধর্মগুরু। যে দেশে স্বাধীনতা নেই, সে দেশকে তিনি পছন্দ করেন না বলে বুধবার মন্তব্য করেছেন তিনি। তিব্বতিদের দেখে চিনা কমিউনিস্ট পার্টিও এক দিন গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শিখবে বলে এ দিন তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

ভারত এবং চিনের মধ্যে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ডোকলামকে কেন্দ্র করে যে টানাপড়েন চলছে, সে প্রসঙ্গে বুধবারই দলাই লামা প্রথম বার মুখ খুললেন। তিনি বললেন, ‘‘এটা খুব বড় বিষয় নয়, ভারত এবং চিনকে পাশাপাশিই থাকতে হবে।’’ যে দু’টি দেশের মধ্যে ডোকলামকে কেন্দ্র করে টানাপড়েন চলছে, সেই দুই দেশই বড় শক্তি এবং সেই কারণেই পারস্পরিক সঙ্ঘাত এড়িয়ে চলা উচিত, ইঙ্গিত দলাই লামার মন্তব্যে। নেহরুর উক্তি টেনে দলাই লামা এ দিন বলেছেন, ‘‘ঘটনাচক্রে হিন্দি-চিনি ভাই ভাই-ই হল একমাত্র পথ। দুটোই বড় দেশ, তাদের পাশাপাশি থাকতেও হবে।’’ ডোকলামে একটি রাস্তা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া টানাপড়েনকে যদি ভারত-চিন মিটিয়ে নিতে না পারে, এই বিষয়কে কেন্দ্র করে যদি দুই বৃহৎ শক্তি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তা হলে কারওরই মঙ্গল হবে না, তিব্বতি ধর্মগুরু এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন। চিনকে কটাক্ষ করতেও অবশ্য ছাড়েননি তিনি।

Advertisement

সীমান্তের সমস্যা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটিয়ে নেওয়া উচিত ভারত এবং চিনের। দুই বৃহৎ শক্তির মধ্যে সঙ্ঘাত কাম্য নয়। বার্তা দলাই লামার। —প্রতীকী ছবি।

দলাই লামা এ দিন ভারতে নাগরিক স্বাধীনতার প্রশংসা করে বলেছেন, ‘‘এ দেশে স্বাধীনতা রয়েছে।’’ এ দেশে থেকে তিনি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেন এবং মত প্রকাশ করতে পারেন বলেও দলাই লামা জানিয়েছেন। আর তার পরেই নাম না করে চিনকে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যেখানে স্বাধীনতা নেই, সেই দেশকে আমি পছন্দ করি না।’’ তিব্বতি সম্প্রদায়ের মধ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলে এ দিন দাবি করেছেন দলাই। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘চিনের মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী চিনের কমিউনিস্টও আমাদের অনুসরণ করতে পারে।’’ ধীরে ধীরে চিনকেও গণতন্ত্রের পথেই হাঁটতে হবে বলে দলাই লামার মত।

আরও পড়ুন: ভেস্তে গেল চিনের সঙ্গে সেনা মহড়া

আরও পড়ুন: ডোকলাম নিয়ে থিম্পু একমত, দাবি চিনের

চিনের কাছে বরাবরই চক্ষুশূল দলাই লামা। তিব্বতি ধর্মগুরুকে চিন ‘বিপজ্জনক’ এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবেই আখ্যা দেয়। আর চিনের বশ্যতা স্বীকার করতে নারাজ তিব্বতিরা দলাইকেই এখনও নিজেদের নেতা মানেন। দলাই লামার নেতৃত্বে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারও চলে হিমাচল প্রদেশের ধরমশালা থেকে। এ হেন দলাই লামা কিন্তু দু’মাস ধরে চলতে থাকা ভারত-চিন টানাপড়েন নিয়ে এত দিন কোথাও মুখ খোলেননি। ডোকলামকে কেন্দ্র করে ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তে উত্তাপ এখন প্রবল। বিষয়টি নিয়ে দলাইয়ের কোনও বিরূপ মন্তব্য চিনকে আরও চটিয়ে দিতে পারে। সে কথা জানেন বলেই মুখ বন্ধ রেখেছিলেন তিনি। বুধবারও অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভাবেই মন্তব্য করলেন প্রবীণ তিব্বতি ধর্মগুরু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন