দলিত হয়েও প্রতিবাদী ছিলেন তিনি। আর্থিক অনটনও দমাতে পারেনি তাঁকে। তবু উঁচু জাতের অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার অপরাধে খুন হতে হয় সেনাবাহিনীর জওয়ান দীনেশ রাঠৌরকে। সেটা ২০১০ সাল। তার পর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ছয় বছর। বিচার মেলেনি আজও। উল্টে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত পাঁচ জনকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত। নিরুপায় বৃদ্ধ বাবা-মা এ বার সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশনে বসেছেন। গাঁধীনগরে দু’সপ্তাহ ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাভাই রাঠৌর (৬৬) ও জেঠিবেন (৬৫) নামে ওই বৃদ্ধ দলিত দম্পতি।
এই লড়াইয়ে তাঁরা পাশে পেয়েছেন ‘প্রতিরোধ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। দলিত অধিকার নিয়ে সরব এই সংগঠনের উদ্যোক্তা রাজুভাই সোলাঙ্কি জানান, সাহসিকতার জন্য সেনাবাহিনী দীনেশকে চার বার পুরস্কৃত করেছিল। ২০১০ সালে জম্মু-কাশ্মীর থেকে হায়দরাবাদে উচ্চপদে বদলি হন দীনেশ। সেই উপলক্ষে কয়েক দিনের জন্য গুজরাতের করাড়ি গ্রামে নিজের বাড়ি ফেরেন তিনি। ইতিমধ্যেই উচ্চবর্ণের এক দল যুবকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরিবারের দাবি, ওই যুবকেরা পঞ্চায়েত ভবনের সামনে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। তারই প্রতিবাদ করেন তিনি। পরের দিন তাই বাড়ির ভিতরে ঢুকে সকলের চোখের সামনে দীনেশকে গুলি করে মারে এক দল দুষ্কৃতী। দীনেশের বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তবে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ২০১৪ সালেই ছাড়া পেয়ে যায় তারা।
সোলাঙ্কি জানান, ছাড়া পেয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছেলের খুনিরা। আর হামলার ভয়ে রোজ মরে বাঁচছেন ওই দম্পতি। এ বারে তাই ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনশনে বসেছেন তাঁরা। এই আর্জি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গেও তাঁরা দেখা করতে চান। বৃদ্ধ দম্পতি জানিয়েছেন, ছেলেকে আর ফিরে পাবেন না ঠিকই। তবু বিচার পেলে একটু শান্তি পাবেন।