সাক্ষাতের পর। গোয়া মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের অফিসের বাইরে। ছবি: সংগৃহীত।
গত কালই রাফাল চুক্তিতে মনোহর পর্রীকরের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু না হওয়ার কেন্দ্রকে তীব্র সমালোচনায় বিঁধেছিলেন রাহুল গাঁধী। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই অবশ্য গোয়ায় অসুস্থ মনোহর পর্রীকরের অফিসে গিয়ে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করলেন তিনি। এই ‘হঠাৎ’ সাক্ষাতের কথা নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন রাহুল। তাঁর কথায়, এই সাক্ষাৎ ‘ব্যক্তিগত’। গোয়া কংগ্রেসের তরফেও জানানো হয়েছে, এই সৌজন্য সাক্ষাতে রাফাল চুক্তি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি।
রাফাল চুক্তি নিয়ে রাহুলের সাম্প্রতিকতম অস্ত্র একটি অডিয়ো টেপ। বিষয়টি নিয়ে সোমবারই ফের নতুন করে আক্রমণ শানান রাহুল গাঁধী। টুইট করে তিনি জানান, ‘৩০ দিন হয়ে গেল, রাফাল সংক্রান্ত অডিয়ো টেপ ফাঁস হয়েছে। এখনও কোনও এফআইআর নেই, কোনও তদন্তও শুরু করা হয়নি। গোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও কোনও তদন্ত শুরু হয়নি। অডিয়ো টেপটি সত্য, কারণ গোয়া মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের কাছেই আছে রাফাল চুক্তির সমস্ত নথি। এই নথি থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর থেকেও ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন মনোহর। ’
সোমবার এই মন্তব্য করার পরের দিনই গোয়া মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের সঙ্গে রাহুলের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই মুহূর্তে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে গোয়ায় ছুটি কাটাতে পৌঁছেছেন রাহুল। যদিও সেই সফরের শুরুতেই গোয়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রশ্ন উঠছে সেই ‘ছুটি’ নিয়েই। এর আগে গোয়ায় দলীয় বিধায়কদের সঙ্গেও একটি বৈঠক সারেন রাহুল।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিটি গরিব মানুষকে ২০১৯-এ কংগ্রেস সরকার ন্যূনতম আয় নিশ্চিত করবে’, প্রতিশ্রুতি রাহুলের
২০১৭ সালে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন মনোহর পর্রীকর। সেই সময়েই ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল কেন্দ্র। এখন অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াসে জটিলতার কারণে গুরুতর অসুস্থ তিনি। অত্যন্ত অসুস্থ হওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে পারছেন না, এই অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগের দাবিতেও সরব বিরোধীরা।
বিতর্কিত অডিয়ো টেপটিতে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে তিন ঘণ্টার মন্ত্রিসভার বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সেই কথা বলতে শোনা যায় গোয়ার বিজেপি নেতা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রাণেকে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘রাফাল যুদ্ধবিমান সংক্রান্ত সমস্ত নথিই আছে গোয়া মুখ্যমন্ত্রীর বেডরুমে।’ কংগ্রেসেরও দাবি, গোয়া মন্ত্রিসভার বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর দাবি করেছিলেন, ‘তাঁকে পদ থেকে সরানো সম্ভব নয়, কারণ রাফাল চুক্তির সমস্ত নথিই রাখা আছে তাঁর বাড়ির বেডরুমে।’
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় ‘অ-বিতর্কিত’ জমি ফেরাতে কেন্দ্রের আর্জি সুপ্রিম কোর্টে
এর আগে বিষয়টি নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেও রাহুলের নেতৃত্বে তোলপাড় করেছিল কংগ্রেস। অন্য দিকে অডিয়ো টেপটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। গোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রাণে অবশ্য জানিয়েছেন, ‘এই অডিয়ো টেপটি ভুয়ো। মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করার উদ্দেশ্যেই এই টেপটি বানানো হয়েছে।’
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)