জনসভায় রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়া রায়পুরে। পিটিআই
ভোটের মুখে এ বার রোজগার-তাস রাহুল গাঁধীর।
আজ ছত্তীসগঢ়ে এক জনসভায় কংগ্রেস সভাপতি প্রতিশ্রুতি দিলেন, ২০১৯-এ কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় এলে সমস্ত গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিন গুজরানের জন্য কিছু টাকা দেবে। রাহুল বলেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতিটি গরিব মানুষকে ২০১৯-এ কংগ্রেস সরকার ন্যূনতম আয় নিশ্চিত করবে। কেউ অভুক্ত থাকবেন না, কেউ গরিব থাকবেন না।’’
তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস বা জোট সরকার ক্ষমতায় এলে মূলত কোন নীতি নিয়ে চলবে, এই ঘোষণায় আজ তার দিশা দেখালেন রাহুল। একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর পালের হাওয়া কিছুটা কেড়েও নিলেন। কারণ, মোদী সরকার ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী বাজেটে গরিব চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা দেওয়ার প্রকল্প ঘোষণার চিন্তাভাবনা করছিল বলে খবর। আগেভাগে সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিলেন রাহুল। রাজধানীতে জোর চর্চা, এরপর বাজেটে যে ঘোষণাই হোক না কেন, তা স্রেফ রাহুলের অনুকরণ বলে প্রচারের সুযোগ পেয়ে যাবে কংগ্রেস। অথচ মোদী সরকারের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন দু’বছর আগে আর্থিক সমীক্ষায় প্রথম এই ভাবনার কথা বলেছিলেন।
শুধু তা-ই নয়, গরিব চাষিদের জন্য ন্যূনতম আয় নিয়ে আলোচনা করতে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকও ডাকা হয়েছিল। তা পরে বাতিল হয়। বিজেপির মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর দুপুরে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশ থেকে দারিদ্র দ্রুত হারে মুছে যাচ্ছে। মোদী ফের ক্ষমতায় এলে দারিদ্র নির্মূল হবে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুলের ওই ঘোষণা। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর তখন পাল্টা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভ্যাস যায়নি।’’
কত টাকা গরিবদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে, তা অবশ্য রাহুল বলেননি। ফলে সরকারের কাঁধে কত টাকার বোঝা চাপবে, তার হিসেবও মেলেনি। প্রশ্ন উঠেছে, মোদীর ঘোষণা আন্দাজ করে, স্রেফ ‘রাজনৈতিক বাজিমাত’ করতে রাহুল আগাম এই ঘোষণা করে দিলেন? কোনও অঙ্ক না কষেই? কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের জবাব, ‘‘এর সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক নেই। গত কয়েক সপ্তাহ আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ন্যূনতম আয় সুনিশ্চিত করা দারিদ্রকে বিদায় জানানোর উপায়। কত টাকা দেওয়া হবে, তা কংগ্রেসের ইস্তাহারে থাকবে।’’
এর আগে রাহুল ঘোষণা করেছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সমস্ত চাষির ঋণ মকুব করা হবে। তার পর আজকের ঘোষণায় ইঙ্গিত, ইন্দিরা গাঁধীর ‘গরিবি হটাও’ স্লোগানকে পাথেয় করছেন তিনি। রাহুলের ব্যাখ্যা, নরেন্দ্র মোদীর আমলে একদিকে অনিল অম্বানী, নীরব মোদীদের ভারত। অন্যদিকে গ্রামের গরিব। এই ভেদাভেদ মেটাতে চান তাঁরা। মনমোহন-জমানায় ১০০ দিনের কাজ বা রোজগার সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পে জোর দিয়েছিলেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy