গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
ফের গবাদি পশুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল বছর বাইশের এক যুবকের। উত্তরপ্রদেশের বরেলীর ভোলাপুর হিন্দোলিয়া গ্রামের ঘটনা। নিহতের নাম শাহরুখ খান।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে গ্রামবাসীরাই তাদের ডেকে পাঠায়। জানায়, শাহরুখ ও তাঁর তিন বন্ধু মিলে গ্রামে মোষ চুরি করতে এসেছিলেন। শাহরুখ জনতার হাতে ধরা পড়ে গেলেও বাকিরা পালিয়ে যান। গণপিটুনিতে গুরুতর জখম শাহরুখকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান যুবক। পুলিশের এসপি অভিনন্দন বলেন, ‘‘গণপিটুনিতে মৃত্যু। কিন্তু সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই যুবক অতিরিক্ত মাদক নিয়েছিলেন। ছেলেটি নিয়মিত মাদক নিতেনও।’’ যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, যকৃত ও কিডনিতে মারাত্মক ক্ষত থেকে মৃত্যু হয়েছে শাহরুখের।
অভিনন্দন আরও বলেন, ‘‘চার জন লোক রাত আড়াইটে নাগাদ গ্রামে ঢুকেছিল মোষ চুরি করতে। ধরা পড়ে গিয়েছে বুঝে তিন জনে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। তার পর সাঁতরে পালায়। শাহরুখ সাঁতার জানত না। তাই ধরা পড়ে গিয়েছিল।’’ শাহরুখের ভাই ফিরোজ অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর ভাই দুবাইয়ের একটি কাপড় কারখানায় কাজ করতেন। এক মাস আগে বরেলীতে ফিরেছিলেন। একটা ফোন পেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। শাহরুখ বাড়ি ফিরছে না দেখে তাঁরা চিন্তায় পড়ে যান। তা-ও ভেবেছিলেন, সকালে চলে আসবেন। কিন্তু সকালে পুলিশের ফোন আসে। মোষ-চুরির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাহরুখের পরিবার। তাঁর পরিবারের দাবি, ও যা রোজগার করত, তা যথেষ্ট।
পুলিশ দু’টি মামলা রুজু করেছে। একটিতে গণপিটুনিতে হত্যার অভিযোগে ২৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। দ্বিতীয়টিতে, শাহরুখ ও তাঁর তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে মোষ চুরির অভিযোগে এফআইআর করেছে গ্রামবাসী। কোনও মামলাতেই এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
একের পর এক গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। এর আগেও উত্তরপ্রদেশের হাপুরে গরু পাচারকারী সন্দেহে খুন করা হয় এক যুবককে। গত মাসেই মহারাষ্ট্রের ধুলেতে ছেলেধরা সন্দেহে হত্যা করা হয়েছিল পাঁচ জনকে।