দিল্লির দূষণের চিত্র। ছবি: পিটিআই।
দীপাবলির পর এক দিন কেটে গিয়েছে। দ্বিতীয় দিনেও দিল্লির বাতাসের গুণমানে কোনও হেরফের হয়নি। মঙ্গলবার রাতেও সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে বাজি পোড়ানোর ধুম। ফলে বুধবার সকালেও দিল্লির বাতাসের গুণমান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) থেকে গিয়েছে ‘খুব খারাপ’-এর পর্যায়েই।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ড (সিপিসিবি)-র ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ দিল্লির গড় একিউআই রেকর্ড হয়েছে ৩৪৫, যা ‘খুব খারাপ’ শ্রেণিতে পড়ে। শহরের মোট ৩৮টি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের মধ্যে ৩৪টিই রয়েছে ‘রেড জ়োন’-এ। বেশির ভাগ এলাকাতেই বাতাসের গুণমান ‘খুব খারাপ’ থেকে ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে। পঞ্জাব বাগ এবং ওয়াজ়িরপুরে বাতাসের গুণমান ৪০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকা ঢেকেছে ধোঁয়াশার পুরু আস্তরণে। মঙ্গলবার অবশ্য দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক ‘অতি ভয়ানক’ পর্যায়ে ছিল। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় দিল্লির বাতাসের গড় বায়ুর গুণমান ছিল ৪৫১, যা জাতীয় গড়ের তুলনায় ১.৮ গুণ বেশি। সেই তুলনায় বুধবার পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। প্রসঙ্গত, শস্যের গোড়া পোড়ানোর কারণেই রাজধানীতে দূষণ বাড়ে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। এ বছর সেই রীতি আগের থেকে ৭৭.৫ শতাংশ কমেছে, তবে দূষণের চিত্রটা বিশেষ বদলায়নি। উল্টে বাতাসে পিএম ২.৫-এর গড় মাত্রা পৌঁছে গিয়েছে ৪৮৮ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্ধারিত বিপদসীমার প্রায় ১০০ গুণ!
উল্লেখ্য, বাতাসের গুণমান সূচক বা একিউআই শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে হলে তা ‘ভাল’ বলে ধরে নেওয়া হয়। গুণমান সূচক ৫১ থেকে ১০০ হলে তা ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে থাকে। আর একিউআই ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘মাঝারি’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০ হলে ‘খুব খারাপ’, ৪০১ থেকে ৪৫০ ‘ভয়ানক’ এবং ৪৫০-এর বেশি হলে ‘অতি ভয়ানক’ ধরা হয়। তাই দীপাবলি-পরবর্তী দূষণ ঠেকাতে প্রতি বছরের মতো এ বারও আগে থেকেই নানা পদক্ষেপ করা হয়েছিল দিল্লিতে। শব্দবাজি, আতশবাজি বিক্রি, মজুত এবং বানানোর উপর আরোপ করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। তবে শর্তসাপেক্ষে সবুজ আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রির অনুমতি দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। যদিও সে সব নিয়মের তোয়াক্কা করেননি দিল্লিবাসী।