খুন বাঙালি বান্ধবীকে, দিল্লির ডাক্তারের আত্মহত্যা

ভোর সাড়ে পৌনে আটটা নাগাদ রোহিনী ১৩ সেক্টরের নির্জন রাস্তার উপরে একটি সাদা সেডান গাড়ির ভিতর  গুলিবিদ্ধ দেহ দুটি প্রথমে নজরে আসে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিল্লিতে বাঙালি বান্ধবীকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন এক চিকিৎসক। বুধবার ভোরে রাজধানীর রোহিনী এলাকায় একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় গুলিবিদ্ধ দু’জনের মৃতদেহ। পুলিশের অনুমান বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই ৫০ বছর বয়সি সুদীপ্তা মুখোপাধ্যায়কে খুন করে আত্নঘাতী হয়েছেন ৬২ বছর বয়সি চিকিৎসক ওমপ্রকাশ কুকরেজা।

Advertisement

ভোর সাড়ে পৌনে আটটা নাগাদ রোহিনী ১৩ সেক্টরের নির্জন রাস্তার উপরে একটি সাদা সেডান গাড়ির ভিতর গুলিবিদ্ধ দেহ দুটি প্রথমে নজরে আসে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেখে, গাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ভিতরে দু’টি দেহ। গাড়িটি ওমপ্রকাশ কুকরেজার নামে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, দেহগুলি ডাক্তার ওমপ্রকাশ ও তাঁর বান্ধবী সুদীপ্তার। গাড়ির ভিতরে একটি বিয়ের কার্ড মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দিল্লির পশ্চিমবিহার এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন দু’জনে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, ১৫ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করতেন ওমপ্রকাশ ও সুদীপ্তা। রাজধানীর সময়পুর বাদলি এলাকায় একটি ডাক্তারখানায় ওই চিকিৎসকের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন সুদীপ্তা। পরে ওমপ্রকাশ রোহিনী ১৫ সেক্টরে নিজের নার্সিংহোম তৈরি করলে ২০০৫ সালে সুদীপ্তা সেখানে যোগ দেন। নার্সিংহোমের প্রশাসনিক দিকটি দেখাশোনা করতেন তিনি। পুলিশের অনুমান, কাজের জগতে পাশাপাশি থাকতে থাকতে দু’জনের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ওমপ্রকাশ যাতে নিজের দৃষ্টিহীন স্ত্রীকে ছেড়ে তাঁকে বিয়ে করেন, সে জন্য চাপ দিচ্ছিলেন সুদীপ্তা। যা মেনে নিতে পারেননি ওমপ্রকাশ। সম্ভবত খুনের কারণ সেটিই। তবে এই ঘটনার পিছনে অন্য কারণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওমপ্রকাশের হাতে একটি বুলেট পাওয়া গিয়েছে। তা থেকেই আত্মহত্যার দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেহগ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: হিন্দুরাষ্ট্রের পথে ভারত, গোপন করলেন না বিজেপি সাংসদ

ওমপ্রকাশের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। তাঁর ছেলে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ। থাকেন দেহরাদূনে। পুত্রবধূও এক জন ডাক্তার। দিল্লির পশ্চিম বিহার এলাকায় থাকেন মেয়ে। তিনি এক জন দাঁতের ডাক্তার। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ওমপ্রকাশের স্ত্রী। রোহিনী ১৩ সেক্টরে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন চিকিৎসক ওমপ্রকাশ কুকরেজা। অন্য দিকে, সুদীপ্তার স্বামী কাজ করেন দিল্লির একটি পরিবহণ সংস্থায়। তাঁর বিবাহিত ছেলে পরিবারকে নিয়ে দুবাইয়ে থাকেন। সুদীপ্তা তাঁর পরিবারের সঙ্গে রোহিনীর ১৮ সেক্টরে থাকতেন।

দুই পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। দিল্লি পুলিশের ডিসিপি রজনীশ গুপ্ত রাজধানীর একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, সুদীপ্তা চাইছিলেন ওমপ্রকাশ তাঁকে বিয়ে করুন। সেই দাবি থেকেই খুন এবং আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। দিল্লি পুলিশের আর এক কর্তা এসডি মিশ্র জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, সুদীপ্তাকে মারার পরেই নিজেকে গুলি করেন ওমপ্রকাশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন