অরবিন্দ কেজরীবাল এবং নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। ছবি: এএফপি।
দিল্লি বিজয় সেরেই এ বার অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন বাড়ানোর প্রস্তুতিতে নেমে পড়লেন অরবিন্দ কেজরীবাল। প্রথম লক্ষ্য পঞ্জাব। তার পরে উত্তরপ্রদেশ।
রামলীলা ময়দানে কেজরীবালের নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে আগামী শনিবার। আপ সূত্রে খবর, সম্ভাব্য মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন সেই তালিকা আজ সন্ধ্যাতেই উপরাজ্যপালের কাছে জমা দিয়ে এসেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। ৭০ আসনের দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী-সহ সর্বাধিক সাত জন মন্ত্রী হতে পারেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বারের চার মন্ত্রী এ বারের তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছেন। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন জিতেন্দ্র তোমর, সন্দীপ কুমার, কপিল মিশ্র, গোপাল রাই। সংখ্যালঘু মুখ হিসাবে গোপাল রাইয়ের বদলে শিঁকে ছিঁড়তে পারে আসিম আহমেদ খানেরও। মুখ্যমন্ত্রী যথারীতি হবেন কেজরীবাল। তবে আগের মন্ত্রিসভা থেকে দু’জনের স্থান পাওয়া প্রায় নিশ্চিত বলে জানিয়েছে আপ নেতৃত্ব। এঁরা সতেন্দ্র জৈন ও মণীশ সিসৌদিয়া। সূত্রের খবর, উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে সিসৌদিয়াকে।
সরকারে আসার পর থেকেই কেজরীবাল যে ক’টি সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছেন তার সব ক’টিতেই সিসৌদিয়াকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে আগামী শনিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানান কেজরীবাল। সেখানেও সঙ্গে ছিলেন সিসৌদিয়া। বারাণসীতে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির কারণে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে পারছেন না জানালেও যে ভাবে সিসৌদিয়া সর্বত্র কেজরীবালের সঙ্গে দিয়েছেন, তা কারওরই নজর এড়ায়নি। এ থেকে স্পষ্ট, দলীয় স্তরে তাঁর পরেই যে সিসৌদিয়ার স্থান সেই বার্তা শুরু থেকেই দিতে চাইছেন কেজরীবাল।
প্রশ্ন হল, সিসৌদিয়ার কেন এই পদোন্নতি?
আপ সূত্রের মতে, পরিকল্পিত ভাবেই সিসৌদিয়াকে তুলে ধরতে চাইছেন কেজরীবাল। তিনিই সব চেয়ে ভরসার লোক হবু মুখ্যমন্ত্রীর। সেই কারণে তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। তা ছাড়া কেজরীবালের মাথায় রয়েছে দিল্লির পাশাপাশি অন্য রাজ্যে শক্তি বিস্তারের স্বপ্ন। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৪০০টি আসনে লড়ে আপ। কিন্তু পঞ্জাব ছাড়া আর কোথাও সাফল্যের মুখ দেখেনি তারা। ওই নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে আপ নেতা যোগেন্দ্র যাদব পরামর্শ দেন দলের উচিত প্রথমে দিল্লিতে সাংগঠনিক শক্তিকে সংহত করা। দিল্লি জয়ের পরে দলের উচিত অন্যান্য রাজ্যের দিকে তাকানো।
এখন দিল্লি বিজয় সম্পূর্ণ। সামনেই পঞ্জাবে নির্বাচন, তার পর উত্তরপ্রদেশ। ভবিষ্যত পরিকল্পনায় তাই আম আদমি পার্টি দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধিতে মন দিতে চাইছে। আর তা করতে হলে আপ নেতৃত্ব জানেন, দলের প্রধান বাজি কেজরীবালই। দিল্লির হবু মুখ্যমন্ত্রীও সে কথা জানেন। সেই পরিস্থিতিতে কেজরীবাল অন্য রাজ্যের কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকলেও দিল্লির প্রশাসনিক কাজে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রথমেই সিসৌদিয়াকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষেক ঘটাতে চাইছেন কেজরীবাল।