হ্যাঁ। চিরাচরিত ঢাকাই কাঞ্জিভরম, বালুচরি, বিষ্ণুপুরী সিল্কের সঙ্গে আধুনিক কাটের ব্লাউজই এবারের পুজোয় দিল্লির ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। যা বলিউডের অভিনেত্রীদের হাত ধরে যথেষ্ট সাহসী। এবার চিত্তররঞ্জন পার্ক থেকে ময়ূরবিহার, দ্বারকা থেকে করোলবাগ-- পুজোতে বাজার মাতাতে আসরে নেমে পড়েছে ভেলভেটের ব্লাউজ। পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতীয় সনাতনী শাড়ির সংঙ্গে লো-কাটের খাদির ব্লাউজের চাহিদাও বাড়ছে।
“প্রাচীন ভারতের মহিলারা ব্লাউজ নিয়ে যথেষ্ট সাহসী ছিলেন। কাঁচুলি পরতেন তাঁরা। ফ্যাশনের চল তো তাঁরাই শুরু করেছিলেন। আমরা তাদের অনুসরণ করি মাত্র।” জানাচ্ছেন দিল্লির অন্যতম ব্যস্ত ফ্যাশন ডিজাইনারপুনম দুবে। যিনি বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ির বোনও বটে। তাঁর বক্তব্য সেই কাঁচুলিই আবার মণ্ডপে ফিরে আসছে আধুনিক ডিজাইনের হাত ধরে।
এটা ঠিকই গোটা বছর বিভিন্ন পোশাকে সজ্জিতা থাকলেও দুর্গা পুজোয় শাড়ি ছাড়া অন্য কোনও পোশাক বিশেষ পছন্দ করেন না রাজধানীর বাঙ্গালি মহিলারা। তবে কিছুদিন আগেও ব্লাউজ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার তেমন সুযোগ ছিল না বলেই মনে করছেন এখানকার ফ্যাশন-পেশাদাররা। সময়ের সঙ্গে বদলেছে দৃষ্টিভঙ্গি। বছরভর স্প্যাগেটি টপ পরা বাঙ্গালি আজ আর হল্টার নেকে অষ্টমির অঞ্জলি দিতে পিছপা নয়। এ বারের পুজোয় চান্দেরি আর ব্রোকেডের ব্লাউজের চাহিদা সবথেকে বেশি বলে জানালেন ব্লাউজ ডিজাইনার ইন্দিরা মেনন। হল্টার নেকের মতো সাহসী কাটের ব্লাউজও পুজোয় “ইন” বলেই মনে করেন তিনি।
হরিয়ানার ব্লাউজের স্টাইলে ছোট কুর্তির মতো ব্লাউজও যেমন পছন্দ করছেন রাজধানীর স্টাইল ডিভারা তেমনিই ডিপ নেকের একরঙা ব্লাউজও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ছাড়াও কলমকারি প্রিন্ট এবং বড় বড় ফুলছাপা ব্লাউজও বাঙলা ধারাবাহিকের প্রভাবে বেশ রমরম করেই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। বলিউডের নায়িকাদের সৌজন্যে সিকুইনের ব্লাউজও মন জয় করে ফেলেছে দিল্লির ষোলো থেকে ষাট সকলেরই। ঠাকুর বাড়ির সাজের বিশ্বস্ত চিত্র থ্রি- কোয়ার্টার ব্লাউজও এবার দেখা যাচ্ছে পুজো মহল্লায়।
পুজোর সময় শাড়ি সামলাতে হিমশিম খান নতুন প্রজন্মের মহিলারা। তাই এ বারের ‘আমাজন ফ্যাশন উইক’-এ তাদের জন্য পেশ করা হয়েছে “ড্রেপ শাড়ি”। এই শাড়ির ডিজাইনার সবিতা বাজপেয়ি বলেন, “প্রথমে একটা প্যান্ট , তার ওপর স্কার্ট এবং সবশেষে আড়াই মিটারের একটি ওড়না হুবহু শাড়ির মতো কাঁধের কাছে প্লিট করা থাকে। এই শাড়িটি সনাতন এবং আধুনিকতার মিশেল। পুজোয় সনাতনী সাজও হলো আবার আঁচল সামলানোর ঝামেলাও রইল না।” ফ্যাশন উইকের পর থেকে চাহিদা বেড়েছে এই শাড়ির।
একদম কমবয়সীদের মধ্যে অবশ্য চাহিদা বেড়েছে স্কার্ট এবং আঙরাখা ডিজাইনের ছোট কুর্তির। এই কুর্তিগুলি প্যারালাল প্যান্ট, ন্যারো প্যান্ট, ধুতি প্যান্টের সংঙ্গে মিক্স-অ্যান্ড ম্যাচ করে পরা হচ্ছে। জ্যাকেট ও পঞ্চোও খুব পছন্দ করছে কিশোরীরা। রয়েছে পালাজোর চাহিদাও। সঙ্গে লম্বা ঝুলের কুর্তি। পায়ে জুতি। ব্যস। পুজোর সাজ কমপ্লিট।