—প্রতীকী চিত্র।
ভিন্ধর্মের এক যুগলের পাশে দাঁড়াল দিল্লি হাই কোর্ট। জানাল, যুগল যদি বিয়ে করতে চান, তা হলে তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে পুলিশকে। শুধু তা-ই নয়, যুগলকে কেন নিরাপত্তা দিতে পারছে না, তা নিয়েও পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত।
২০১৮ সালে এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে হিন্দু তরুণীর। গত মাসে দিল্লি হাই কোর্টের কাছে আবেদন জানান, তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না। পুলিশি নিরাপত্তা এবং থাকার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় চান। সাত বছর ধরে সম্পর্কে থাকার পর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন এই যুগল। কিন্তু দুই পরিবারের তরফে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। এমনকি হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে যুগলের অভিযোগ। তার পরই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, যুগলকে নিরাপত্তা না দিয়ে পুলিশ তাঁদের আলাদা করার চেষ্টা করছে। তার পরই পুলিশকে ভর্ৎসনা করে যুগলের জন্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যুবকের আইনজীবী উৎকর্ষ সিংহ জানিয়েছেন, যুগলকে কোনও রকম নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। বরং তরুণীকে ‘জোর করে আলাদা’ করা হয়েছে। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয় এবং ২৪ জুলাই থেকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। তরুণী তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য বার বার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবী উৎকর্ষের।
অন্য দিকে, পুলিশ পাল্টা দাবি করেছে, কোনও জোরজবরদস্তি করা হয়নি। যুগলকে আলাদা করার কোনও প্রচেষ্টাও হয়নি। এই মামলায় কোনও দিক থেকেই প্রক্রিয়াগত ত্রুটি নেই। মহিলার নিরাপত্তার যাতে কোনও খামতি না হয়, সব দিকটাই দেখা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের এই যুক্তি মানতে চায়নি আদালত। শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন তরুণী। সেখানে তিনি অভিযোগ জানান, পুলিশ তাঁকে জোর করে তাঁর সঙ্গীর কাছ থেকে আলাদা করেছে। শুধু তা-ই নয়, তরুণীর আরও অভিযোগ, পুলিশের কাছে যখন নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছিলেন, তখন তাঁদের জানানো হয়, ‘সেফ হাউস’ বলে কোনও কিছু হয় না। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচাপতি নারুলার মন্তব্য, তদন্তকারী আধিকারিক কি তরুণীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন? এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর পরই যুগলের নিরাপত্তা এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি।