—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অপরিচিত ব্যক্তির মুখোশের আড়ালে প্রাক্তন প্রেমিকই ‘ব্ল্যাকমেল’ করতেন! শুধু তা-ই নয়, অ্যাসিড হামলা থেকে ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক মহিলার কাছ থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন হিমাংশু অরোরা নামে এক যুবক।
বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হলেও ঘটনার সূত্রপাত শুরু ২০২১ সালে। ওই মহিলার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে আলাপ হয়েছিল হিমাংশুর। সেই আলাপ ক্রমশ গাঢ় হয়। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। অভিযোগ, প্রেমের সম্পর্কে থাকাকালীনই মহিলার বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি, ভিডিয়ো নিজের কাছে সংগ্রহ করে রাখেন হিমাংশু। পরে সেই ছবি, ভিডিয়োকেই হাতিয়ার করে ‘ব্ল্যাকমেল’ শুরু করেন তিনি।
কী ভাবে প্রতারণার ছক কষেছিলেন হিমাশু? অভিযোগ, প্রেম ভাঙার পরেই ওই যুবক ভুয়ো ইনস্টাগ্রাম এবং ইমেল অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেই অ্যাকাউন্ট থেকেই নানা সময়ে প্রাক্তন প্রেমিকাকে তাঁরই নানা আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিয়ো পাঠাতে শুরু করেন। সেই সব ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এমনকি, এক লাখ টাকা না দিলে অ্যাসিড হামলা করা হবে বলেও হুমকি দেন হিমাংশু।
তিন বছর ধরে এই ‘ব্ল্যাকমেল’ চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত অতিষ্ট হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। অভিযোগ পাওয়ার পরেই দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল একটি বিশেষ দল গঠন করে। তদন্তে পুলিশ ন’টি ভুয়ো ইনস্টাগ্রাম এবং ইমেল অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে। জানা যায়, ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে অভিযোগকারিনীকে হেনস্তা করা হত। সেই সব অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে দেখতেই একটি ফোন নম্বরের খোঁজ পায় পুলিশ। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই হিমাংশুর সন্ধান মেলে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ফোন নম্বরটি হিমাংশুর মায়ের। পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ এবং ততে অভিযোগকারিণীর বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি-ভিডিয়ো উদ্ধার করে।
হিমাংশু দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। পড়াশোনা শেষে পূর্ব দিল্লিতে ব্যবসা শুরু করেন। বহু দিন তাঁর বিয়েও হয়েছে। তাঁর ১২ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। গ্রেফতারির পর জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন হিমাংশু। দাবি ছিল, তাঁর ল্যাপটপ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সারাইয়ের জন্য একটি দোকানে দেন। ছবি, ভিডিয়ো ফাঁস করার হুমকির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। পরে অবশ্য অভিযোগ স্বীকার করেছেন বলেই দাবি পুলিশের।