অভিযুক্ত ‘বাবা’ চৈতন্যনন্দ। ফাইল চিত্র।
তিনি নিজেকে ম্যানেজমেন্ট গুরু এবং লেখক হিসাবে পরিচয় দেন। প্রোফাইল বলছে, ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো বুথ স্কুল অফ বিজনেস থেকে এমবিএ এবং পিএইচডি করেছেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে সাতটি সাম্মানিক ডি.লিট.। দেশ এবং বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেই সব সম্মান পেয়েছেন। যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত দিল্লির স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যনন্দের শিক্ষাগত যোগ্যতা এখন পুলিশের তদন্তের আওতায়।
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বাবার এই শিক্ষাগত যোগ্যতাও ভুয়ো কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে বই প্রকাশিত হয়েছে চৈতন্যনন্দের, সেগুলিতে নিজেকে ‘বিশ্ববন্দিত লেখক’ বলে দাবি করেছেন তিনি। তদন্তকারীদের একটি অংশ আবার জানাচ্ছেন যে, চৈতন্যনন্দ তাঁর একটি বইয়ের লেখক পরিচিতিতে উল্লেখ করেছেন যে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চৈতন্যনন্দের লেখা ‘ট্র্যন্সফর্মিং পার্সোনালিটি’ নামে বইটির বার বার উল্লেখ করেছেন। এমনও দাবি করেছেন যে, ওই বইটি ২০০৭ সালে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ‘বেস্ট সেলার’ বইয়ের তালিকায় ছিল।
বইটির লেখক পরিচিতিতে নিজেকে প্রথিতযশা অধ্যাপক, লেখক, বাগ্মী, শিক্ষাবিদ, আধ্যাত্মিক দার্শনিক, সমাজসেবী এবং ম্যানেজমেন্ট গুরু বলে উল্লেখ করেছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ‘ফরগেট ক্লাসরুম লার্নিং’ নামে নিজের লেখা একটি বইয়ের মুখবন্ধে অ্যাপল সংস্থার নির্মাতা স্টিভ জোবস তাঁর এই বইটির প্রশংসা করছেন— এমন একটি উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন। তবে চৈতন্যনন্দ নিজের সম্পর্কে যে সব পরিচয় দিয়েছেন এবং তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পূর্ণ ভুয়ো বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই ভুয়ো দূতাবাসের নম্বরপ্লেট লাগানো একটি গাড়ির হদিস পেয়েছে পুলিশ। এখন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও তথ্যতালাশ শুরু করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট সার্কুলার জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য জুড়ে ‘বাবা’র তল্লাশি চালানো হচ্ছে। দিল্লির একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধিকর্তা এই ‘বাবা’। সেই কলেজেরই ছাত্রীরা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, ছাত্রীদের শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য জবরদস্তি করা হত। অশ্লীল এবং কদর্য ভাষায় মেসেজ করতেন। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ‘বাবা’র একের পর এক কীর্তি প্রকাশ্যে আসছে। আর কী কী কীর্তি রয়েছে ‘বাবা’র, এখন সেই তথ্যই খুঁজে বার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।