National News

সন্ধ্যায় বাবা-মা-বোনের সঙ্গে সেলফি, রাতেই তিন জনকে নৃশংস খুন!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:০৫
Share:

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস

কলেজ ফাঁকি দেওয়া, পড়াশোনা না করা, আড্ডা দেওয়া, পরীক্ষায় ফেল করার মতো বখে যাওয়ার প্রায় সব ‘গুণ’ই ছিল। এ নিয়ে বাড়িতে অশান্তি। স্বাধীনতা দিবসের দিন তার সঙ্গে যোগ হয় ঘুড়ি ওড়ানো। ওই দিনও বকুনি দিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু রোজ রোজ এই ‘শাসন’ অসহ্য ছিল। শেষ পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে বোনকে চরম ‘শিক্ষা’ দিল কলেজপড়ুয়া যুবক। পর পর ছুরি চালিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করল তিন জনকে! রোমহর্ষক এই ঘটনা ঘটেছে দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকায়।

Advertisement

ঘটনাটি ১৪ অগস্টের হলেও প্রকাশ্যে এসেছে বুধবার, বছর উনিশের সুরজ বর্মাকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর। পুলিশের দাবি, জেরায় তিন জনকে খুনের কথা স্বীকার করেছে সুরাজ। এ-ও জানিয়েছে, প্রতিনিয়ত মা-বাবার বকুনিতে বিরক্ত হয়েই তিন জনকে খুন করেছে সে।

কিন্তু, পরিবারের তিন জনকে খুন করার পরও গ্রেফতার করতে পুলিশের এত দিন কেন লাগল? তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে খবর, তিন খুনের আগে পরে এমন ভাবে পটভূমি তৈরি করেছিল, যে সুরজের দিকে সন্দেহ হলেও সূত্র মিলছিল না। অবশেষে টানা জেরায় ভেঙে পড়ার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ অগস্ট ঘুড়ি ওড়ানো নিয়ে বকাবকি করেন সুরজের বাবা-মা। বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। স্থানীয় দোকান থেকে ছুরি ও কাঁচি কিনে আনে। এর পর অনেক রাত পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটায়। তাঁদের সঙ্গে গল্প করা, সেলফি তোলা, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে। তার পর সবাই ঘুমাতে যায়।

এর পর ভোর তিনটে নাগাদ সুরজ ঘুম থেকে উঠে মা-বাবার ঘরে যায়। সেখানে প্রথমে তার বাবা মিথিলেশ বর্মাকে পর পর ছুরি চালিয়ে আক্রমণ করতে থাকে। ৪৪ বার ছুরি চালায় সে। ঘুম ভেঙে যায় মা সিয়াদেবীর। তাঁকেও একই ভাবে আক্রমণ করে সুরজ। এর পর বোনের ঘরে গিয়ে তার গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়। পুলিশের দাবি, বোনকে খুন করার সময়ও মা বেঁচে ছিলেন এবং তিনি মেয়েকে বাঁচানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বোনকেও পর পর ছুরি মেরে খুন করে সুরজ।

আরও পড়ুন: দুই তৃণমূল সাংসদ ‘কাটমানি’ চেয়েছিলেন! ম্যাথুর মেল সিবিআইয়ের হাতে​

নিজেরই বাবা-মা ও বোনকে খুনের পর ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো করে ছড়িয়ে দেয়। ছুরি ও নিজের গায়ে রক্তের দাগ বাথরুমে গিয়ে ধুয়ে ফেলে সে। এর পর ঘণ্টা দুয়েক পর প্রতিবেশীদের ডেকে ডাকাতি হয়েছে বলে জানায়। এই গল্পটাকে বিশ্বাস করাতে নিজের হাতেও ক্ষতচিহ্ন তৈরি করে সুরজ।

তিন জন খুন হলেও এক জনের হাতে সামান্য চোট। পাশাপাশি বাড়ির জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড থাকলেও কিছুই খোয়া না যাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তবে কোনও প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কিন্তু ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা তদন্তে গিয়ে বুঝতে পারেন, ছুরি থেকে দাগ ধোয়া হয়েছে। তার পরই সুরজকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুরো ঘটনা জানা যায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগেও সুরজ এক বার নিজেকে অপহরণের গল্প ফেঁদেছিল। সে বার পুলিশি জেরায় পরে সে কথা স্বীকারও করেছিল। এ বারও শেষ রক্ষা হল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন