Ram mandir

বাবরি ভাঙা অপরাধ ছিল: লিবেরহান

১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার ১০ দিনের মাথাতেই ওই ঘটনার তদন্তে লিবেরহান কমিশন তৈরি হয়।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ০৪:১৪
Share:

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে রিপোর্ট দিচ্ছেন বিচারপতি এমএস লিবেরহান। ফাইল চিত্র

অযোধ্যায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামমন্দিরের শিলান্যাস করতে পারেন, কিন্তু বাবরি মসজিদ ভাঙা অপরাধ ছিল বলেই লিবেরহান কমিশনের প্রধান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনমোহন সিংহ লিবেরহানের দাবি।

Advertisement

অযোধ্যায় মন্দিরের শিলান্যাসের দু’দিন আগে আনন্দবাজারের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় লিবেরহানের মন্তব্য, “অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরুর সঙ্গে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অপরাধের মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।”

লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীর মতো রামমন্দির আন্দোলনের কান্ডারিরা বাবরি মসজিদ ভাঙার মামলায় (২৭ বছরের পুরনো) লখনউয়ের বিশেষ আদালতে সম্প্রতি সাক্ষ্য দিয়েছেন। দুই প্রবীণ নেতাই আদালতে দাবি করেছেন, তাঁরা নির্দোষ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে তাঁদের এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অপরাধী যারাই হোক, লিবেরহান এখনও বলছেন, ‘‘মসজিদ ভাঙা অন্যায় হয়েছিল, তা ছিল অপরাধ।’’ চণ্ডীগড়ের বাড়ি থেকে ফোনে ৮২ বছরের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির মন্তব্য, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিচার এক দিন হবেই। বিচারব্যবস্থার উপরে পূর্ণ আস্থা জানিয়ে তাঁর মত, “বাবরি মসজিদ ভাঙার মামলা স্বাধীন ভাবে চলবে। সুপ্রিম কোর্টের রামমন্দিরের পক্ষে রায়, রামমন্দিরের শিলান্যাস ওই মামলার উপরে প্রভাব ফেলবে না।”

Advertisement

১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার ১০ দিনের মাথাতেই ওই ঘটনার তদন্তে লিবেরহান কমিশন তৈরি হয়। বিচারপতি লিবেরহান তখন হাইকোর্টে কর্মরত। অবসরের পরে পুরোদমে কাজ শুরু করেন। আগেই বলেছেন, কোনও সরকারের থেকেই তিনি সাহায্য পাননি। ১৭ বছর পরে, ২০০৯-এ তাঁর রিপোর্ট জমা পড়ে। লিবেরহান তাঁর রিপোর্টে বলেছিলেন, ‘মসজিদে হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। আরএসএস ক্যাডারদের বিশেষ দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাস্থলে নেতারা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।’

আরও পড়ুন: রামের নগরী যেন দুর্গের ঘেরাটোপে থাকা 'পীতাম্বরী' নববধূ

আরও পড়ুন: ‘আমি তো শুধু রামলালার পূজারী’! বললেন ‘বিষণ্ণ’ প্রধান পুরোহিত!

সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষে রায় দিলেও বাবরি মসজিদে হামলাকে লিবেরহানের মতোই ‘পরিকল্পিত’ বলেই আখ্যা দিয়েছিল। আডবাণী-জোশী আদালতে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। তবে লিবেরহান তাঁর রিপোর্টে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের নেতাদেরই দোষী সাব্যস্ত করে বলেছিলেন, শুধু ক্ষমতার লোভে বিজেপি-আরএসএস-বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-শিবসেনা-বজরং দলের মধ্যে এক দল নেতা এগিয়ে এসেছিলেন। তাঁরা মতাদর্শ দ্বারা চালিত হননি। সুপ্রিম কোর্টও মসজিদ ভাঙার ঘটনাকে ‘আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দেয়।

তবে রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হওয়ায় প্রাক্তন বিচারপতির কোনও অসন্তোষ নেই। তিনি বলেন, “এক দিন না এক দিন ফয়সালা হতেই হত। সুপ্রিম কোর্টই মন্দিরের পক্ষে রায় দিয়েছে।” আগামী পরশু কি টেলিভিশনে রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠান দেখবেন? লিবেরহানের জবাব, “আমি তেমন আগ্রহী নই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন