রাস্তার মধ্যে গাড়ি ভাঙচুর শিব ভক্তদের। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
ভোলে বাবার ভক্তরা যাচ্ছিলেন। শিবের মাথায় জল ঢালতে। তাঁদের দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে গেল একটি গাড়ি। তাতে আবার জলও ছিটকে গিয়েছিল। এই ‘ঔদ্ধত্য’ ও ‘নাস্তিকতা’ সহ্য হয়নি বাবার ভক্তদের। রাস্তায় ওই গাড়ি ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিলেন কানওয়ার যাত্রীরা। শিবভক্তদের ‘রুদ্রমূর্তি’ দেখল রাজধানীর রাজপথ। গেরুয়া পোশাক পরা ওই বাহিনীর তাণ্ডব দাঁড়িয়ে দেখল আমজনতা। বিন্দুমাত্রও বাধা দিল না পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গেরুয়া বাহিনী কালো রঙের একটি ছোট গাড়িতে বেপরোয়া ভাঙচুর চালাচ্ছে। সামনের কাচ, দরজা ভেঙে তছনছ করা হচ্ছে। দুলকি চালে পুলিশকর্মীরা ঘোরাফেরা করছেন ওই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যেই। তাঁদের মধ্যে ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসাররাও রয়েছেন। কিন্তু বাধা দেওয়া দূর অস্ত, মুখেও একবার নিষেধ করতে দেখা যায়নি তাঁদের কাউকে। বরং গেরুয়া দলের ওই সদস্যদেরই একজন পুলিশকে সরিয়ে দিচ্ছেন, সেই দৃশ্যও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।
পরে জানা যায়, মোতিনগরের কাছে ঘটনাটি ঘটে। রাস্তায় সার দিয়ে স্লোগান তুলে যাচ্ছিল ভক্তদের একটি দল। গাড়ির চালক সেখানে গতিবেগ না কমিয়ে বেরিয়ে যান। তাতে রাস্তায় জমে থাকা কিছুটা জল ছিটকে যায় কয়েকজন ভক্তের গায়ে। তার পর খানিকটা এগিয়ে এসে সিগন্যালে বা কোনও কারণে দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়িটি। সেটা দেখেই ভক্তদের রোষ আছড়ে পড়ে। শুরু হয় ভাঙচুর।
আরও পড়ুন: রাম নাম জপনা, পরায়া মাল আপনা, এটাই মোদী সরকারের সত্যিকারের সংস্কার: রাহুল
এ রাজ্যে তারকেশ্বরে মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার মতোই উত্তর ভারতে কানওয়ার যাত্রা। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে বাড়ি থেকে বাঁকে গঙ্গাজল নিয়ে হেঁটে হরিদ্বার, গোমুখ বা গঙ্গোত্রীতে জল ঢালতে যান প্রচুর পুণ্যার্থী। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, পঞ্জাব, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্য থেকে দলে দলে লোকজন পুণ্যলাভের আশায় এই যাত্রায় শামিল হন।
আরও পড়ুন: দলিতের পাশে আছি, পাল্টা প্রচারে মোদী
এই যাত্রাপথে দিল্লি হরিদ্বার জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পুণ্যার্থীদের জন্য অস্থায়ী শিবিরও তৈরি করা হয়। নিয়ন্ত্রণ করা হয় যানবাহন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকেন পুলিশকর্মীরা। এ দিনের ঘটনায় পুলিশকর্মীরা কার্যত দর্শকের ভূমিকা ছাড়া আর কিছুই করতে দেখা যায়নি। তবে সরকারিভাবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।