Advertisement
E-Paper

রাম নাম জপনা, পরায়া মাল আপনা, এটাই মোদী সরকারের সত্যিকারের সংস্কার: রাহুল

নিজের তৈরি স্লোগান এখন আর ভুলেও উচ্চারণ করেন না নরেন্দ্র মোদী। সে কথাই আজ স্মরণ করিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। মোদীর অস্ত্রেই তাঁকে বিদ্ধ করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৪
মনোনিবেশ: মহিলা অধিকার সম্মেলনে বক্তৃতার আগে খসড়ায় চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: এএফপি।

মনোনিবেশ: মহিলা অধিকার সম্মেলনে বক্তৃতার আগে খসড়ায় চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: এএফপি।

অচ্ছে দিন…।

নিজের তৈরি স্লোগান এখন আর ভুলেও উচ্চারণ করেন না নরেন্দ্র মোদী। সে কথাই আজ স্মরণ করিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। মোদীর অস্ত্রেই তাঁকে বিদ্ধ করলেন।

কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে রাহুল বলেন, ‘‘২০১৪-য় মোদীজি বলেছিলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে ধীর গতির ট্রেন চলেছে। তাই তিনি ঝাঁ চকচকে ‘জাদু রেল’ বানাবেন। ‘অচ্ছে দিন’ আনবেন। তাঁকে ভোট দিলেই যাত্রা সুগম হবে। কিন্তু চার বছরে একনায়ক, অযোগ্য, ঔদ্ধত্যে ভরা চালক যাত্রীদের পরোয়াই করেননি। মানুষ এখন বদল চাইছে। তারা আর ধ্বংসের দিকে যাওয়া জাদু ট্রেনে সওয়ার হয়ে বোকা হতে চায় না।’’

রাহুল এ দিন মোদী সরকারের দুর্নীতি নিয়ে সরব হন। বলেন, ‘‘দুর্নীতি শেষ করা আর স্বচ্ছ সরকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোদীজি। কিন্তু রাফাল দুর্নীতি শতাব্দীর সব চেয়ে বড় কেলেঙ্কারি।’’ তাঁর অভিযোগ, রাফাল কেলেঙ্কারিতে দেশের মানুষের ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা জড়িয়ে।
রুগ্‌ণ বাণিজ্যিক সংস্থাকে বাঁচাতেই এটা করা হয়েছে। বিদ্রুপের সুরে রাহুল বলেন, ‘‘এটাই মোদী সরকারের সত্যিকারের সংস্কার। রাম নাম জপনা, পরায়া মাল আপনা।’’

নাগরিক পঞ্জি বিতর্ক নিয়েও বিজেপিকে এক হাত নিয়েছেন রাহুল। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে দেশের সব চেয়ে বড় সমস্যা হল অসমের নাগরিক পঞ্জি। মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন নাগরিক পঞ্জির নাম নথিভুক্তির কাজ শুরু হয়। কিন্তু বিজেপি সরকারের আমলে সেটা যে ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা অত্যন্ত অসংবেদনশীল। রাহুলের কথায়, ‘‘চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় যাঁদের নাম নেই, তাঁরা আতঙ্কে ভুগছেন। কোন সময় তাঁদের দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে, প্রহর গুনছেন তাঁরা। কেন্দ্র ও অসম সরকারের উচিত দ্রুত সমস্যা সমাধানের উপায় বার করা।’’ দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কংগ্রেস কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান রাহুল।

কাজ কই

নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, বছরে দু’কোটি চাকরি দেব। চার বছর পরে কখনও বলছেন, পকোড়া ভাজাও কাজ! কখনও বলছেন, অটো-ট্যাক্সি চালানোও চাকরি! তাঁর সরকারের মন্ত্রীই বলছেন, চাকরি কই! এমন অবস্থায় চাকরির হিসেব মেলাতে ৯ জন বা তারও কম কর্মী কাজ করেন, এমন কারখানার কর্মী সংখ্যার হিসেব কষবে কেন্দ্র। গৃহবধূদের ঘরকন্নার কাজের আর্থিক মূল্যও মাপা হবে।

কংগ্রেস নেতারা বলছেন, সংসদীয় দলের বৈঠকে ‘অচ্ছে দিন’-এর কথা খুঁচিয়ে তোলার পিছনে রাহুলের বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। কারণ, মোদীর এই স্লোগানের কথা টেনেই একে একে সব ভুয়ো প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরা যায়। বছরে ২ কোটি চাকরি, প্রতি ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা ফেরানো, কালো টাকা ফিরিয়ে আনা, পেট্রোপণ্যের দাম কমানো, মহিলা-দলিতদের নিরাপত্তা, কৃষি আয় দ্বিগুণ— সব প্রতিশ্রুতিই তো ডাহা ফেল! আর এর সঙ্গেই রাহুল টেনে আনছেন ‘গব্বর সিং ট্যাক্স’ (জিএসটি), নোটবন্দির ব্যর্থতা। সঙ্গে রাফাল বিতর্ক, মেহুল চোক্সী, নীরব মোদীদের কেলেঙ্কারির কথা। মোদীর প্রতিশ্রুতি পালনের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে উনিশের ভোটে ঝাঁপাতে চান কংগ্রেস সভাপতি। বিজেপি নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন, ভোটের আগে ‘অচ্ছে দিন’-এর স্লোগানের কথা তোলা রাহুলের ভাল কৌশল। তবে কেন্দ্রের জনমুখী প্রকল্প নিয়ে জোরালো প্রচার করেই এর মোকাবিলা করতে হবে।

সংসদীয় দলের বৈঠকে রাহুলের দাবি, ২০০৪-এ অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় ‘ভারত উদয়’ স্লোগান দিয়ে বিজেপির যে হাল হয়েছিল, পরের লোকসভা ভোটেও তা-ই হবে। তবে রাহুলের মতে, মোদীর বিরুদ্ধে শুধু খড়্গহস্ত হয়েই নয়, কংগ্রেস ও সহযোগী দলগুলিকেও মানুষের মধ্যে নতুন আশা ও আস্থা জাগাতে হবে। গত ভোটে মোদী ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন। এখন মানুষ বদল চাইছে। মানুষের সমস্যা বুঝে কংগ্রেসকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। রাহুল বলেন, ‘‘মোদী সরকারের দুর্নীতি, আর্থিক ব্যর্থতা, অযোগ্যতা আর সামাজিক বিভাজন ছড়ানোর বিকল্প হিসেবে মানুষকে নতুন আশা জোগাতে হবে। সহযোগী দলগুলির সঙ্গে মিলে কংগ্রেসকে সে কাজ করতে হবে।’’

Rahul Gandhi Acche Din Narendra Modi Congress BJP নরেন্দ্র মোদী রাহুল গাঁধী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy