—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আকাশপথে যাত্রী সুরক্ষা বাড়াতে, বিমানচালকদের শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি যাচাইয়ের নিয়মকানুন আরও কঠোর করার প্রস্তাব দিয়েছে দেশের বিমান পরিবহন নিয়ামক সংস্থা (ডিজিসিএ)। সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত নতুন নীতিতে বিমান চালানোর আগে এবং পরে পরীক্ষার বিধিতে কঠোর নিয়ম বলবৎ করার কথা বলা হয়েছে। চালকদের শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি মিললে অতীতে প্রথমবার ছাড় দেওয়া হত। এ বার থেকে বলা হয়েছে, এমন ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চালককে প্রথমেই তিন মাসের জন্য কাজ থেকে বসিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় বার অপরাধের ক্ষেত্রে তিন বছর এবং তৃতীয় বার অপরাধের ক্ষেত্রে বিমান চালানোর লাইসেন্স চিরতরে বাতিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উড়ানের শেষে রক্তে অ্যালকোহল মিললে আরও কঠোর শাস্তির সুপারিশও করা হয়েছে।
ডিজিসিএ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, উড়ান সংস্থাগুলিকে চালকদের ‘ব্রিদ অ্যানালাইজ়ার’ পরীক্ষার ভিডিয়ো ফুটেজ অন্তত ছ’মাস এবং সেই সংক্রান্ত নথি অন্তত এক বছর সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রত্যেকটি উড়ানের চালকদের পরীক্ষার ফল ডিজিসিএ-কেপাঠাতে হবে।
বিমান চালানোর কিছু আবশ্যিক শর্ত (সিভিল এভিয়েশন রিকোয়ারমেন্ট) থাকে। বিমান পরিবহণ মহলের দাবি, আবশ্যিক শর্তে এমন নিয়মের কড়াকড়ি গত এক দশকে শোনা যায়নি। তবে ডিজিসিএ মনে করছে, বিমানচালকদের শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা যাচাইয়ে কড়াকড়ি করা হলে যাত্রী সুরক্ষা অনেক বেশি নিশ্চিত হবে। সাধারণত, উড়ানের ১২ ঘণ্টা আগে থেকে মদ্যপান নিষিদ্ধ বলে গণ্য করা হলেও নতুন নিয়মে নেশার প্রভাব যাতে চালকের কাজকর্ম এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত না-করে, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
নতুন প্রস্তাবে ডিজিসিএ বলেছে যে, কোথাও দুর্ঘটনার পরিস্থিতি তৈরি হলে উড়ানের অব্যবহিত পরেই চালক এবং বিমানকর্মীদের ওই পরীক্ষা করতে হবে। চালক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন হলে, প্রয়োজনে হাসপাতালে গিয়ে ওই পরীক্ষা করতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে চালক ওই পরীক্ষা এড়িয়ে গেলে, তিনি ওড়ার পরে প্রথম যে শহরে নামবেন, সেখানেই ওই পরীক্ষা করাতে হবে এবং চালকের পরীক্ষা এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক ভাবে ডিজিসিএ-কে জানাতে হবে।
এ ছাড়াও, উড়ান চলাকালীনও পাইলটেরা যাতে মদ্যপান না-করেন, তা নিশ্চিত করতে উড়ানের পরেও পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে বলেছে ডিজিসিএ। বলা হয়েছে, উড়ান শেষে পাইলটের শরীরে অ্যালকোহল মিললে প্রথমেই এক বছরের জন্য লাইসেন্স বাতিল করা হবে। দ্বিতীয় বার একই ঘটনা ঘটলে লাইসেন্স চিরতরে বাতিল হবে। বিদেশি বিমানের চালকদের ক্ষেত্রেও যে স্বল্পকালীন মেয়াদের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তা-ও বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন নীতি সম্পর্কে বিভিন্ন বিমান সংস্থাগুলিকে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে। ওই সব মতামত খতিয়ে দেখে নতুন বিধি চালু করা হবে বলে ডিজিসিএ সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক উড়ানের চালক ছাড়াও পাইলট প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও নতুন নিয়মের আওতায় আনা হয়েছে। এমনকি, পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অন্তত ৪০ শতাংশ পড়ুয়াকে ওই ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে