Politics

‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’, ‘সৌভ্রাতৃত্ব’ রাখায় মমতাকে অভিনন্দন জানিয়ে দিল্লিকে বার্তা ঢাকার

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পর নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্বকে সুকৌশলে বার্তা দিল প্রতিবেশী বাংলাদেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৭:১২
Share:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পর নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্বকে সুকৌশলে বার্তা দিল প্রতিবেশী বাংলাদেশ।

Advertisement

তৃণমূল নেত্রীর জয়ের হ্যাটট্রিকে অভিনন্দনবার্তা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠিও লিখেছেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সেই চিঠিতে বাংলার দীর্ঘদিনের চর্চিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’ এবং ‘সৌভ্রাতৃত্ব’কে ধরে রাখার জন্য মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সম্প্রীতির আদর্শ নিয়েই দেশ গড়েছিলেন।

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মোদী সরকারকে এই বক্তব্যের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্ম ভাবে বার্তা দিল হাসিনা সরকার। তৃণমূল নেত্রী তথা তাঁর দল জয়ের আগে এবং পরে বার বার অভিযোগ করে এসেছেন যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতিকেই প্রচারের অঙ্গ করেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে ভোট চলার সময়ে এবং তার আগেও বার বার বাংলাদেশের আবেগকে আঘাত করা হয়েছে বলে কখনও ঘরোয়া ভাবে, কখনও প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঢাকা। সিএএ-এনআরসি বিতর্কে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে এক বন্ধনীতে রাখা, অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহের ধারাবাহিক বিরূপ মন্তব্যকে যে ভাল ভাবে নেয়নি বাংলাদেশ, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে প্রকাশ্যেই। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে মতুয়াদের মন্দির দর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যদিও তাঁর সফরের মূল কারণ ছিল বঙ্গবন্ধুর একশো বছর উদযাপন। তাঁর বাংলাদেশ সফরে সে দেশে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। আওয়ামি লিগের একাংশও ঘরোয়া ভাবে মনে করেছে যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর অথবা শেখ মুজিবের একশো বছরের প্রধান অতিথি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের অনেকটাই ঢেকে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মধ্যে মতুয়া মন্দির দর্শনে।

Advertisement

দিন কুড়ি আগে অমিত শাহ মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকায় নিচুতলায় পৌঁছয়নি। সে দেশে গরিব মানুষ খেতে পাচ্ছে না বলেই অনুপ্রবেশ চলছে। এর আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের উইপোকা বলাতেও বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী প্রকাশ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্ঞান অতি সীমিত। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ তাঁর দেশের (ভারতের) থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।” বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, “বিশ্বে এমন অনেক বুদ্ধিমান লোক রয়েছেন যাঁরা দেখেও দেখেন না, বুঝেও বোঝেন না। উনি (অমিত শাহ) যদি এমন কিছু বলে থাকেন তা হলে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানগম্যি খুবই সীমাবদ্ধ। আমাদের দেশে এখন ক্ষুধায় কারও মৃত্যু হয় না। দেশে কোনও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয় না এখন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন