দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস। শুক্রবার দুর্ঘটনার আগে। ছবি: পিটিআই।
দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভেঙে পড়া ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস থেকে শেষ মুহূর্তে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন পাইলট। বায়ুসেনার উইং কমান্ডার নমন স্যালের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তিনি বেরোতে পারেননি। ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে দলা পাকিয়ে গিয়েছে তাঁর শরীর। বিস্ফোরণে ঝলসে গিয়েছে। শনিবার দুর্ঘটনার আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে তেজসের শেষের মুহূর্ত আরও স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, প্যারাশুটের ঝলক দেখা গিয়েছে কালো ধোঁয়ার মধ্যে থেকে!
সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস। ব্যর্থতার হার খুব কম। ২৪ বছরের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তেজস ভেঙে পড়ল। নতুন ভিডিয়োতে দুবাইয়ের এয়ার শো-র বিপর্যয়ের শেষের এক মিনিট দেখা গিয়েছে। ধীরে ধীরে বিমানটি নেমে আসছিল। এক বার কাত হয়ে গিয়ে কিছু দূর এগিয়ে আবার সোজা হয়েছিল তেজস। কিন্তু তার পর পুরোপুরি উল্টে যায় শূন্যেই। এর পর বিমানটিকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি পাইলট। দ্রুত গতিতে তা নীচের দিকে নেমে আসে এবং মাটিতে আছড়ে পড়ে।
ফুটেজ দেখে অনেকে মনে করছেন, বিমানটি উল্টে যাওয়ার পর তাকে উপরে তোলার জন্য অনেক ক্ষণ চেষ্টা করেছিলেন পাইলট। শেষ মুহূর্তে হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু ওই সময়েই যদি তিনি বিমানটি উপরে তোলার চেষ্টা না-করে প্যারাশুট খুলে নিজে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতেন, তবে হয়তো বেঁচে যেতে পারতেন। এর আগে ভারতে যে একটিমাত্র তেজস ভেঙে পড়েছিল, তা প্রশিক্ষণের সময়ের ঘটনা। সে ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে পাইলট বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। এ ক্ষেত্রে পারেননি।
দুবাইয়ের স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৮ মিনিটে তেজস ভেঙে পড়ার পর ভারতীয় বায়ুসেনা বিবৃতি জারি করে পাইলটের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। তবে এখনও পর্যন্ত তাদের তরফে দুর্ঘটনার কোনও কারণ জানানো হয়নি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ ভিডিয়ো দেখে জানিয়েছেন, শূন্যে তেজস নিয়ে একটি বিশেষ কৌশল দেখানোর পরিকল্পনা ছিল পাইলটের। তা ‘ব্যারেল রোল’ নামে পরিচিত। এই কৌশলে জেট এক বার উল্টে গিয়ে আবার সোজা হয় এবং গোলাকার কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। মনে করা হচ্ছে, মাটির সঙ্গে বিমানের দূরত্ব অনেকটা কমে এসেছিল। তাই কৌশলটি সম্পূর্ণ করা যায়নি। অনেকে বলছেন, উল্টে যাওয়ার পর আবার সোজা হয়ে উপরের দিকে উঠতে যে গতির প্রয়োজন হয়, বিমানে সেই গতি ছিল না। কেউ কেউ আবার ইঞ্জিনের ত্রুটির দিকে আঙুল তুলছেন। তাঁদের মতে, শেষ মুহূর্তে তেজসের ইঞ্জিনটিতে কোনও কারণে আগুন ধরে গিয়েছিল। পাইলট তাই আর পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি।