ট্রেকিং মানেই রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চার। পাহাড়ে ট্রেকিং করতে যান কেউ, আবার সমুদ্র পাড় ঘেঁষে সি ট্রেকিংয়ের কথা নিশ্চয় শুনেছেন, তবে ফোর্ট ট্রেক! এমনটাও হয় নাকি। বিশাল উঁচু একটা কেল্লা, তার উপরে উঠতে চান অনেক অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী। এমনটাও কিন্তু হয়। এবং হয় এই দেশেই।
মহারাষ্ট্রের নাসিকের হরিহর কেল্লা। বিশাল খাড়াই এই কেল্লা। আর তার উপরে ওঠার জন্য ছুটে আসেন অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা!
তিন কোণা একটি পাথর। ভূমি থেকে ওই কেল্লার শীর্ষ পর্যন্ত দু’টি ঢাল প্রায় ৯০ ডিগ্রি খাড়াই। পশ্চিম দিকের ঢাল প্রায় ৭৫ ডিগ্রি খাড়াই।
পাথুরে সিঁড়ির মতো খাঁজ রয়েছে এই কেল্লায়। ১১৭টি খাঁজকাটা পকেটের মতো ধাপ রয়েছে। তবে বর্ষাকালে এই ট্রেকে না যাওয়াই ভাল, কারণ পাথুরে ধাপ একেবারে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে।
খানিকটা সিঁড়ি পেরোলেই হনুমান মন্দির ও শিবলিঙ্গ রয়েছে। এরপর খানিকটা উঠে রয়েছে একটি জলাশয়।
৩,৬৭৬ ফুটের কেল্লাটির ২০০ ফুট উচ্চতা একেবারে খাড়াই। ত্রম্বকেশ্বর পর্বত থেকে ১৩ কিমি দূরে বৈতর্ণা বাঁধের কাছে রয়েছে এই কেল্লা।
কেল্লার উপরে রয়েছে দু’টি আলাদা ঘরের মতো জায়গা। এক সময়ে এটি নাকি রান্নাঘর হিসাবে ব্যবহার করা হত।
কেল্লার কাছেই নিরগুডপাড়া গ্রাম। সেখান থেকে জঙ্গলের দিকে যাওয়ার রাস্তা ধরে এগোলেই কেল্লার দিকে পৌঁছনো যাবে। কেল্লার শীর্ষে পৌঁছে দেখা যাবে সহ্যাদ্রি পর্বতশ্রেণি। ব্রহ্মগিরি ও বৈতর্ণও দেখা যাবে পরিষ্কার।
এই কেল্লার ধাপে একবারে একজনই উঠতে পারেন। এই কেল্লার পাশের গ্রামটিকে বলা হয়, স্কটিশ কাড়া। কারণ ১৯৮৬ সালে ডাউগ স্কট নামের একজন বিখ্যাত ট্রেকার দু’দিন সময় নিয়ে উঠেছিলেন এই কেল্লার শীর্ষে।
হরিহর কেল্লা বা হর্ষগড় কেল্লা দেবগিরির যাদব শাসনকালে তৈরি। এর বেশির ভাগটা তৈরি হয় এই আমলেরই শাসক পঙ্কজ পঞ্চারিয়ার আমলে। তুঙ্গভদ্রা থেকে নর্মদা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই শাসকদের রাজ্য। ৯ থেকে ১৪ শতক পর্যন্ত এই সাম্রাজ্যের স্থায়ীত্ব ছিল বলে জানা যায়।
এই কেল্লা ঘিরে মরাঠা, মুঘল ও ইংরেজ তিন দলেরই যুদ্ধ হয়েছিল। ১৮১৮ সালে ব্রিটিশরা মরাঠাদের থেকে এই কেল্লা দখল করে। ১৬৮৯ সালে এই কেল্লা দখল করেছিল মুঘলরা।