US Tariff on India

তিন পরিস্থিতিতে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্কের নির্দেশিকা পরিবর্তন সম্ভব! কী হলে কী কী হতে পারে? জানালেন ট্রাম্প

ট্রাম্প যে নির্দেশিকায় বুধবার স্বাক্ষর করলেন, তাতে বলা হয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাশিয়ার তেল আমদানি করে চলেছে ভারত। তাই তাদের পণ্যে বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৫ ২৩:০৩
Share:

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ভারতের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের যে নির্দেশিকায় বুধবার স্বাক্ষর করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তিনটি পরিস্থিতিতে তাতে পরিবর্তন সম্ভব। নির্দেশিকাতেই তার উল্লেখ রয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনটি ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

Advertisement

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাশিয়ার তেল আমদানি করে চলেছে ভারত। এতে ‘জরুরি অবস্থা’ তৈরি হয়েছে। ফলে ভারতের পণ্যের উপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। নির্দেশিকা জারির ২১ দিন পর থেকে এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হবে। বিভিন্ন পণ্যের উপর এত দিন যে শুল্ক প্রযুক্ত ছিল, তা থাকবে। তার সঙ্গে এই ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক যুক্ত হবে।

কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবর্তন হতে পারে?

Advertisement

ট্রাম্পের নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে ‘জরুরি অবস্থা’র বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তার মোকাবিলার জন্য এই নির্দেশে পরিবর্তন করা হতে পারে। যদি কোনও অতিরিক্ত তথ্য পাওয়া যায়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি তেমন কোনও সুপারিশ করেন বা যদি পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়, তবে নির্দেশিকায় সংশোধন করা হবে।

এই পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে যদি কোনও দেশ আমেরিকার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ করে, তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্দেশিকায় সংশোধন করা হতে পারে।

উপরে বর্ণিত ‘জরুরি অবস্থা’র মোকাবিলার জন্য রাশিয়া বা অন্য কোনও দেশ যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে এবং তা যদি আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা, বিদেশনীতি কিংবা অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তা হল এই নির্দেশে পরিবর্তন ও সংশোধন করা হতে পারে।

আমেরিকার বাণিজ্যসচিব, বিদেশসচিব, ট্রেজ়ারি সচিব এবং অন্যান্য আধিকারিকদের কয়েকটি নির্দেশও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ভারতের মতো অন্য কোনও দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তেল কিনছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে এই সমস্ত আধিকারিকদের। যদি করে, তা হলে সেই দেশের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা উচিত, ভারতের মতো তাদের পণ্যেও ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করা উচিত কি না, সে বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পর ‘জরুরি অবস্থা’র কী পরিস্থিতি, তার দিকে নজর রাখা হবে। যদি দেখা যায় এতে কোনও লাভ হয়নি বা উল্টে আমেরিকার ক্ষতি হয়েছে, তবে তা-ও প্রেসিডেন্টকে জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী পরিস্থিতি বিবেচনা করে পদক্ষেপ করবেন ট্রাম্প।

৫০ শতাংশ শুল্কের ঘোষণার পর ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে কঠোর বিবৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। বলা হয়েছে, আমেরিকার সিদ্ধান্ত ‘অন্যায্য’। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে আমেরিকা। আমরা এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। আমাদের আমদানি বাজারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য অনেক দেশ জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে একই পদক্ষেপ করছে। তা সত্ত্বেও বাড়তি শুল্ক আরোপের জন্য আমেরিকা বেছে নিচ্ছে ভারতকে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এই পদক্ষেপ অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনর্থক। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে ক্রমশ। ভারতের উপর যে পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এই শুল্কে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে হলে ভারতের ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন। তবে আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেছেন ট্রাম্প। দিল্লির তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়, সে দিকে নজর রয়েছে।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement