ট্রাম্প-বন্দনা ছেড়ে দু’দলেই নজর দিল্লির

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শেষবেলায় সেনেট চলে গিয়েছিল বিরোধীদের হাতে। আর কংগ্রেস ছিল তাঁর দল ডেমোক্র্যাটদের হাতে।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:০৪
Share:

নরেন্দ্র মোদী সরকার মনে করছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশ নীতিতে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন হবে না।—ছবি রয়টার্স।

আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, নরেন্দ্র মোদী সরকার মনে করছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশ নীতিতে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন হবে না।

Advertisement

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শেষবেলায় সেনেট চলে গিয়েছিল বিরোধীদের হাতে। আর কংগ্রেস ছিল তাঁর দল ডেমোক্র্যাটদের হাতে। এর ফলে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত ডামাডোল হয়েছিল। গত কাল মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের পরে নরেন্দ্র মোদী আজ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশসচিব বিজয় গোখলে এবং বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে কোনও মন্তব্য নয়। প্রজাতন্ত্র দিবসে সরকার ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ করেছিল বটে, কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকার যে খুব ট্রাম্প-ভক্ত, এমনটা না দেখানোই ভাল।

নবনির্বাচিত কংগ্রেস সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া শেষ হলে কংগ্রেস অধিবেশন শুরু হবে বড়দিনের পরে। জানুয়ারি মাসে মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানান দুর্নীতির অভিযোগে সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের সম্ভাবনা প্রবল। ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট আনতে গেলে সেনেট এবং কংগ্রেসের দু’টি কক্ষেই বিরোধীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। কংগ্রেসে না থাকলেও সেনেটে ট্রাম্পের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে।

Advertisement

রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তের জন্য ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেলকে তাড়িয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে, মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের ফলে আগামী বছরটা ট্রাম্পের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। ভারতে যে রকম সরকার অনেকটাই লোকসভাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী সেটা সম্ভব নয়। রণেন সেনের মতো কূটনীতিকও মনে করেন, পরমাণু চুক্তির সময় বোঝা গিয়েছিল শুধু জর্জ বুশ প্রশাসন নয়, সেনেট এবং কংগ্রেসের সদস্যদেরও বোঝাতে হয়েছিল কেন পরমাণু চুক্তি প্রয়োজন।

এর পরেও বিদেশ মন্ত্রকের কূটনীতিকরা বলছেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রবল ক্ষমতাশালী। তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাশ করতে গেলে দু’টি সভাতেই বিরোধীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। সেনেটে ট্রাম্পের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। আর সেনেটে বিদেশি নীতি নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আর হাউসে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।’’ ফলে ভারত মনে করছে, ট্রাম্পের বিদেশ নীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। তবে রণেন সেন এবং শিবশঙ্কর মেননের মতো কূটনীতিকরা মনে করছেন, আমেরিকায় ভোট ২০২০ সালে। ২০১৯-এ ভারতেও লোকসভা নির্বাচন। তাই ট্রাম্প-বন্দনা ছেড়ে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের থেকে সমদূরত্বের নীতি নিয়ে চলাই উচিত।

শিবশঙ্কর বলেন, ‘‘বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিল ক্লিন্টন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তখনও আমেরিকা গিয়ে বিরোধী নেতা বুশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন বাজপেয়ী। আজও ভারতের উচিত সেই সমদূরত্বের নীতি বজায় রাখা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন