—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে স্কুলশিক্ষকদের ‘নির্যাতনে’ মানসিক অবসাদে ভুগছিল বছর ষোলোর দিল্লির কিশোর! শেষ পর্যন্ত বুধবার মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পুলিশ তার কাছ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। কেন সে ওই পথ বেছে নিল, তা লিখে রেখে গিয়েছে নোটে। একই সঙ্গে নিজের শেষ ইচ্ছার কথাও জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ রাজেন্দ্র প্লেস মেট্রো স্টেশনে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই কিশোর। পরিবার সূত্রে খবর, দুপুরে নাটকের ক্লাসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তবে এমন কাণ্ড ঘটাবে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি পরিবারের কেউই। ওই কিশোরের থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।
এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তা জানান, ওই নোটে কিশোর প্রথমে নিজের পরিচয় লিখেছিল। একই সঙ্গে ফোন নম্বরও ছিল। তার পরেই লেখে, কেন সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। সে জানায়, স্কুলশিক্ষকেরা তাকে প্রায়ই নানা কারণে বকাঝকা করতেন। সেই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। শেষে আর সহ্য করতে না-পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এই পদক্ষেপের জন্য বাবা-মা এবং দাদার কাছে ক্ষমাও চেয়েছে। তার অনুরোধ, মৃত্যু পর যেন তার অঙ্গদান করা হয়।
ছাত্রের বয়ান, ‘‘দুঃখিত বাবা-মা, দাদা। আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমার মৃত্যুর পর যদি আমার কোনও অঙ্গ সচল থাকে তো, তা দান করে দিয়ো তোমরা। তাতে অন্য কারও প্রাণ বাঁচবে।’’ মৃতের বাবার দাবি, তাঁর ছেলের মানসিক সমস্যা নিয়ে বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা এ ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন। সাহায্যের পরিবর্তে প্রায়ই খারাপ ব্যবহার করতেন শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার স্কুলে নাটকের ক্লাস ছিল। সেখানে মহড়া চলাকালীন ভুলবশত তাঁর ছেলে পড়ে যায়। সেখানে উপস্থিত শিক্ষক তাঁকে সাহায্য না-করে উল্টে ধাক্কা মারেন। বাড়ি ফেরার পর থেকে এই নিয়ে মনমরা ছিল। কিন্তু এমন কাজ করবে তা ভাবতেও পারেননি বলে জানান মৃত পড়ুয়ার বাবা।
সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। উল্লিখিত স্কুলশিক্ষকদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।