জোড়া খুনে কাছাড়ে ধৃত প্রৌঢ় মাদক ব্যবসায়ী

মাদক ও নারীঘটিত কারণে খুন হয়েছিল কাছাড় জেলার কালাইন ভাঙ্গারপারের জামিনুল ইসলাম ও সফিকুল ইসলাম। মোবাইলের সূত্র ধরে দু’মাস পর পর্দা উঠল হল কালাইনের জোড়া খুনের রহস্যের উপর থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০৪:০৩
Share:

মাদক ও নারীঘটিত কারণে খুন হয়েছিল কাছাড় জেলার কালাইন ভাঙ্গারপারের জামিনুল ইসলাম ও সফিকুল ইসলাম।

Advertisement

মোবাইলের সূত্র ধরে দু’মাস পর পর্দা উঠল হল কালাইনের জোড়া খুনের রহস্যের উপর থেকে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৬০ বছরের ফকরউদ্দিন ও তাঁর তিন ছেলে-সহ পাঁচজনকে। পুলিশ জানায়, ধৃত অন্যরা হল মুক্তাহির আলি, ইমরুল হোসেন, মঞ্জুরুল হক ও আলতাফ হোসেন। প্রথম ফকরউদ্দিনের তিন ছেলে। তাঁর আরেক ছেলে মুমিত পলাতক। পুলিশ তাকেও খুঁজছে। ধৃত আলতাফ তারই সঙ্গী। ৯ জুন সকালে রাস্তায় দুই যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন স্থানীয় জনতা। পুলিশ তদন্তে নেমে সত্যরঞ্জন রায় ও লোকেশ রায় নামে দুই ভাইকে গ্রেফতার করে। কিন্তু দীর্ঘ জেরায়ও কোনও সূত্র বের করতে না পেরে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রাখে। হাতিয়ার করা হয় মৃত সফিকুলের মোবাইল সেটটিকে। মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেও তার মোবাইলের হদিশ মিলছিল না। এরই মধ্যে ডিএসপি পি পি শইকিয়া খোঁজ নিয়ে দেখেন— সফিকুলের নম্বর থেকে মাঝে মাঝে ফোন করা হয়। কথা হয় এক জনেরই সঙ্গে। তিনি বড়খলার এক গাড়িচালক। পুলিশ তাকে থানায় তুলে আনে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে, ফকরউদ্দিনের বাড়ি থেকে তাকে ফোন করা হয়। ফকরউদ্দিনের ছেলে মুমিত কয়েক মাস আগে বড়খলায় বিয়ে করেছে, ওই সূত্রে তাদের পরিচয়। শুক্রবার রাতে ডিএসপি শইকিয়ার নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ফকরউদ্দিনের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। গ্রেফতার করা চার জনকে। দু’দিন লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে খুনের কাহিনি। কাছাড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষিনী শঙ্করন জানান, ফকরউদ্দিনের বাড়িতে মাদকের ঘাঁটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকরা সেখানে গিয়ে মাদক নেয়। নিহত জামিনুল ইসলাম এবং সফিকুল ইসলামও নিয়মিত তাদের বাড়ি যেত। ৮ জুন রাতেও যায়। মাদকও নেয়। আচমকা সফিকুল ফকরউদ্দিনের মেয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলেই সবাই মিলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। অতিরিক্ত মাদক নেওয়ায় জামিনুল সঙ্গীকে খুন হতে দেখেও পালিয়ে যেতে পারেনি। পরে সাক্ষ্য মেটাতে তারা জামিনুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরিবারের লোকদের বাইরে তখন বাড়িতে ছিল মুমিনের সঙ্গী আলতাফ। তারা দু’জন মিলে মৃতদেহ দু’টি মুমিনের ট্যাক্সিতে জাতীয় সড়কে ফেলে যায়। ফকরউদ্দিন ও তার ছেলেদের কাছ থেকে আলতাফের কথা জেনে গত রাতে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পৃথক জেরায় আলতাফও একই বিবরণ দেয়। শঙ্করনের দাবি, মুমিনও পুলিশের জালে ধরা পড়বে।

এলাকার দুই যুবক খুনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাস্তা অবরোধ, সভা-সমিতি, বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি সবকিছুতেই নেতৃত্ব দিচ্ছিল ধৃত আলতাফ। ফকরউদ্দিনের ছেলেদেরও তার সঙ্গে দেখা যেত। সব ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এ বার এলাকায় শান্তি ফিরবে বলেই আশা করছেন স্থানীয় জনতা।

Advertisement

পুকুরে দেহ। পুকুরে তরুণের দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়াল হাইলাকান্দিতে। পুলিশ জানায়, আজ ভোরে শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্বদেশ শর্মার বাড়ির পুকুরে একটি দেহ ভাসতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম সন্তোষ দেব। বাড়ি করিমগঞ্জের দুর্লভছড়া এলাকায়। হাইলাকান্দিকে হোটেলে কাজ করতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন