National

ঝড়ে তছনছ উত্তর ভারত, মৃত শতাধিক, আশঙ্কা আরও শক্তিশালী তাণ্ডবের

গত কাল ঝড়ে উত্তরপ্রদেশের চার জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। ঝড়ে অসংখ্য গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বন্ধ রাস্তাঘাট। অন্ধকারে ডুবে বহু এলাকা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০৪:০৩
Share:

ঝড়-বৃষ্টিতে আগরায় ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। ছবি: এএফপি।

প্রবল মরুঝড় ও মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বড় অংশ। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ। আহত দু’শোরও বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখনও বিপদ কাটেনি। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরপ্রদেশে শক্তিশালী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। রাজস্থান-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে তাণ্ডব চালাতে পারে এই ঝড়। উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, রাজস্থানের বেশ কিছু অংশে বায়ুর চাপ রয়েছে। ফলে প্রমাদ গুনছে সে রাজ্যও।

Advertisement

গত কাল ঝড়ে উত্তরপ্রদেশের চার জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। ঝড়ে অসংখ্য গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বন্ধ রাস্তাঘাট। অন্ধকারে ডুবে বহু এলাকা। উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, রাতে ঘুমের মধ্যে বাড়ি চাপা পড়েই মারা গিয়েছেন অধিকাংশ। মৃতের হার সব চেয়ে বেশি আগরায়। ঘণ্টায় ১২৬ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সঙ্গে বুধবার রাত ৮.৪৫ থেকে ১১.৩০ পর্যন্ত ৪৮.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে সেখানে। মারা গিয়েছেন ৪৩ জন। জখম ৩৫। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার পর উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম অংশে আছড়ে পড়ে ধুলোর ঝড়। সহারনপুরে ঝড়ের তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি। তুলনায় ক্ষতি কম। সরকারি আধিকারিকরা জানান, বিজনোরে প্রাণ হারান ৩ জন, কানপুরে ৩, সহারনপুরে ২ ও বরেলীতে ১ জন। এই চার এলাকায় দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মৃতদের পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। ভয়াবহ ধুলোর ঝড় রাজস্থানে প্রাণ কেড়েছে ৩৩ জনের। উদ্ধারকাজে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইট, ‘‘সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছি আধিকারিকদের।’’

বিশেষজ্ঞরা জানান, রাজস্থানের বেশির ভাগ জায়গায় গত ক’দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। কোথাও কোথাও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফলে গরম জলীয় বাষ্প হাল্কা হয়ে খুব দ্রুত উপরে উঠে যায়। হাল্কা জলীয় বাষ্প উপরের স্তরে ঠান্ডা বায়ুর সংস্পর্শে এসে তৈরি হয় মেঘ। তার জেরেই গত কাল দুপুরে হঠাৎ শুরু হয় প্রবল ধুলোর ঝড়। কয়েক ঘণ্টায় তছনছ হয়ে যায় অলওয়র, ভরতপুর ও ঢোলপুর। টুইটে আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শোক জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও।

Advertisement

আরও পড়ুন: বৈঠক প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা কমিটির

উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টিতে বন্ধ চারধাম যাত্রা। থমকে বদ্রীনাথ হাইওয়ে। রাজধানী দেহরাদূনে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ। বিদ্যুৎ ও জল সরবারাহ বন্ধ নৈনিতাল, হলদোয়ানি, মুসৌরির কাছে জৌনপুরে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় চামোলি, উত্তরকাশী, রুদ্রপ্রয়াগে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা। মধ্যপ্রদেশেও ঝড়ের বলি ২। ভিন্ড জেলার কল্যাণপুরে মৃত্যু হয় ৪ বছরের এক শিশুর। বৃষ্টির তাণ্ডব চলেছে পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও। পাতিয়ালায় মৃত ২।

উত্তর ভারতে ব্যাপক বিপর্যয় থেকে রেহাই পায়নি রাজধানীও। ঘণ্টায় ৫৯ কিলোমিটার বেগে হাওয়ায় দিল্লি বিমানবন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ১৫ টি বিমানের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন