ত্রিপুরায় ইভিএমে গলদ, মেনে নিল কমিশন

নির্বাচন কমিশনের সচিব অরবিন্দ আনন্দ ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও) শ্রীরাম তরনী কান্তকে চিঠি পাঠিয়ে তিন দফা সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী ও বাপি রায়চৌধুরী

কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:০৩
Share:

ভোটের দিন যে বেনজির বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল ইভিএম ঘিরে, শেষ পর্যন্ত সেই ত্রুটি কবুল করে নিল নির্বাচন কমিশন। গলদ মেনেই কমিশনের সিদ্ধান্ত, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের ৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে। ভোট প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মীদের গাফিলতির কারণেই ৭টি কেন্দ্রের ৭টি বুথে গণনা করা হবে ভি ভি প্যাটের স্লিপ। কোনও নির্বাচনে ভি ভি প্যাটের স্লিপ গুনে ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত এই প্রথম।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের সচিব অরবিন্দ আনন্দ ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও) শ্রীরাম তরনী কান্তকে চিঠি পাঠিয়ে তিন দফা সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে: সোনামুড়া, ধনপুর (মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যেখানে প্রার্থী), তেলিয়ামুড়া, সাব্রুম, অম্পিনগর ও কদমতলা-কুর্তি কেন্দ্রের একটি করে বুথে ২৬ তারিখ আবার ভোট নেওয়া হবে। খামবন্ধ ভি ভি প্যাটের স্লিপ গণনা হবে বনমালীপুর (বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব যেখানে প্রার্থী), আশারামবাড়ি, শান্তিরবাজার, সাব্রুম, করবুক, রাইমাভ্যালি এবং করমছড়ার একটি করে বুথে। কমিশনের সচিবের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ওই বুথগুলিতে প্রিসাইডিং অফিসারেরা ‘মক টেস্টে’র ফল না সরিয়েই ইভিএম ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন ভোটের জন্য! এমন ঘটনায় স্বভাবতই গুরুতর প্রশ্ন উঠছে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে।

বিভ্রাটের কাহিনি অবশ্য এখানেই শেষ নয়। কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাঁকড়াবন-শালগড়া, বিলোনিয়া, শান্তিরবাজার এবং জলাইবাড়ির একটি করে বুথে মোট ভোটের সংখ্যার সঙ্গে ভোটারসংখ্যার ফারাক ধরা পড়েছে! জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি সামান্য ভোটে নেমে এলে কমিশনের বিশেষ অনুমতি ছাড়া ওই কেন্দ্রগুলির ফল ঘোষণা করা যাবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেলিয়ামুড়ার একটি বুথের ভোট-নেওয়া ইভিএম অন্যত্র রেখে ফাঁকা যন্ত্র ‘সিল’ করে রাখা হয়েছিল স্ট্রংরুমে! সেই বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কী ভাবে হল এত গলদ? পুনর্নির্বাচন ৮ দিন পরেই বা কেন? সিইও তরনী কান্ত শুক্রবার বলেছেন, ‘‘টেকনিক্যাল কারণে কিছু সমস্যা হয়েছে। যেমন যেমন রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে, সে ভাবেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের অভিযোগ, ‘‘অন্য কেন্দ্রের ভোটারেরা এখন সংশয়ে পড়বেন, তা হলে কি তাঁদের ভোট ঠিকমতো পড়েছে? এই অপরাধমূলক উদাসীনতার সম্পূর্ণ দায় নিয়ে ভোটারদের কাছে কমিশনকে কৈফিয়ত দিতে হবে! অনুনয়-বিনয় অনেক হয়েছে!’’ কমিশনের অপদার্থতার বিরুদ্ধেও বিপুল সংখ্যায় সোমবার ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বিজনবাবু। তবে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরের মন্তব্য, ‘‘গোলমাল একটা হয়েছে। তবে ইভিএম বা ভি ভি প্যাট যেখান থেকেই গণনা হোক, রায় শুধু বিজেপি-র পক্ষেই হয়ে আছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন