বিহারে এসআইআর নিয়ে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ করছে রাজনৈতিক দলগুলি, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কমিশন। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ছিল ‘নির্ভুল’। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানাল নির্বাচন কমিশন। তাদের মতে, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি ‘মিথ্যা অভিযোগ’ করছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে এক জন ভোটারও তাঁর নাম বাদ গিয়েছে বলে কোনও আবেদন করেননি।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে রাজনৈতিক দলগুলির তরফে কেউ ছিলেন না। সেই বিষয়টি ধরিয়ে দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চ জানিয়েছে, এসআইআর তালিকায় ভোটারদের নামের যে ভুল (টাইপোগ্রাফিক্যাল এরর) রয়েছে, তা সংশোধন করে নেওয়া হবে বলেই আশা তাদের।
বিহারে ভোটার তালিকার এসআইআর করাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়েছিল। সেই আবেদন খারিজ করার আর্জি জানিয়ে কমিশন জানিয়েছে, আবেদনকারীরা ‘মিথ্যা অভিযোগ’ করেছে। এসআইআর প্রক্রিয়ার সম্মানহানির জন্যই এ সব করা হয়েছে। কমিশন হলফনামায় আরও জানিয়েছে, রাজনৈতিক দল এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি ভোটারদের নাম যাতে তালিকায় থাকে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য কিছু করেনি। কেবল বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) নিয়োগে বাধা দিয়েছে। তারা শুধু কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এসআইআর প্রক্রিয়ার ‘ভুল’ ধরার চেষ্টা করেছে। সেখানে আপত্তি এবং সংশোধনের আবেদন খুব কমই জমা পড়েছে।
তার পরেই কমিশনের বক্তব্য, ‘‘এর থেকেই প্রমাণ হয় যে এসআইআর প্রক্রিয়া নির্ভুল ছিল। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে প্রায় তিন লক্ষ ৬৬ হাজার জনের নাম বাদ যাওয়া বা তা থাকা নিয়ে আপত্তি তোলার পরেও এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদন জমা পড়েনি।’’ কমিশন এ ক্ষেত্রে যোগেন্দ্র যাদব এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগের কথাও তুলেছে। তাদের অভিযোগ ছিল, বিহারে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ৬৫ লক্ষের মধ্যে ২৫ শতাংশ মুসলিম। চূড়ান্ত তালিকা থেকে যে ৩.৬৬ লক্ষ জনের নাম বাদ দিয়েছে, তাদের ৩৪ শতাংশ মুসলিম। নাম শনাক্তকারী সফটওয়্যারের মাধ্যমে এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ যোগেন্দ্রদের।
এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। আদালতে সওয়ার করে তাদের আইনজীবী বলেন, ‘‘এই ধরনের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি মানা যায় না। কোনও ভোটারের ধর্মের বিষয়ে নির্বাচন তালিকা ডেটাবেসের কাছে কোনও তথ্য থাকে না।’’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির তরফে সওয়াল করেন প্রশান্ত ভূষণ। তিনি জানান, ঠিক কত জন ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে, তা কমিশনের জানানো উচিত। প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও বলা উচিত।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৪ নভেম্বর। দুই বিচারপতির বেঞ্চে জানিয়েছে, কমিশন যে কর্তব্য পালন করবে এবং মসৃণ ভাবে ভোট করাবে, তা নিয়ে তাদের কোনও সন্দেহ নেই।