—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
গত ফেব্রুয়ারিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জ্ঞানেশ কুমার। ছ’মাস অতিক্রান্ত। তাঁর এই সময়কালের মধ্যে নির্বাচন কমিশন কী কী পদক্ষেপ করেছে— তা এ বার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হল। ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এনে তা আরও জোরদার করার কাজ চলছে বলে জানায় কমিশন। এ ছাড়াও, নির্বাচন আধিকারিকদের কাজেও স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, নির্বাচনী পদ্ধতিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর, ভোটদানের সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে নানা কাজ করেছে কমিশন।
বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনীর বিতর্কে মধ্যেই নিজেদের কাজের খতিয়ান দিল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরির’ অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অনেক নেতানেত্রী। সেই আবহে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার উপর জোর দেওয়ার কথা বলল কমিশন।
কমিশন জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচনী আধিকারিকেরা। শুধু তা-ই নয়, জোর দেওয়া হয়েছে সর্বদলীয় বৈঠকের উপরও। নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করেছে কমিশন। জানানো হয়েছে, নিষ্ক্রিয় বা পরিচিত নয় এমন রাজনৈতিক দলকে তালিকা থেকে সরানো, বিএলওদের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে পরিচয়পত্র প্রদান, ইভিএম ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, বুথে বুথে ওয়েব কাস্টিং বাধ্যতামূলক করার মতো পদক্ষেপও করেছে কমিশন।
ভোটার তালিকা বিশুদ্ধিকরণের ক্ষেত্রেও বড় কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। বিহারে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, একই এপিক নম্বরে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকা নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের অবসান ঘটানোর মতো কাজ হয়েছে গত ছ’মাসে। নির্বাচনী আধিকারিক বা নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে নানা কাজ করেছে কমিশন।
ভোটার তালিকার এসআইআর করতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। বস্তুত, শুধুমাত্র বিহারেই নয়, এর পরে দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও একই ভাবে সমীক্ষা চালাতে চায় কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই এই সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কমিশনের সমীক্ষার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শেষ শুনানিতে কমিশনকে সময় বেঁধে দিয়ে বাদ পড়া ভোটারদের নাম প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে। কেন নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তা-ও ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। অন্য দিকে, কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, বিজেপির হাতের ‘পুতুল’ হয়ে কাজ করছে কমিশন। যদিও বিরোধীদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা।