সাবির শাহ। —ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযানে আরও এক ধাপ এগোল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গভীর রাতে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাবির শাহকে গ্রেফতার করেছে ইডি। অন্য দিকে গতকাল গ্রেফতার হওয়া সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে আজ ১০ দিনের জন্য এনআইএ হেফাজতে পাঠিয়েছে বিশেষ আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে বাদগামের হুমহামা থানায় হেফাজতে নেওয়া হয়েছে সাবিরকে। তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের একটি বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলা রয়েছে। তাঁকে আজ দিল্লি নিয়ে আসা হবে। গতকাল সাত নেতার গ্রেফতারির প্রতিবাদে আজ হরতাল ডেকেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তখনই সৈয়দ আলি শাহ গিলানি ও মিরওয়াইজ ওমর ফারুককে গৃহবন্দি করে প্রশাসন। ইয়াসিন মালিককে আটক করা হয় শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলে।
আরও পড়ুন: বায়ুসেনার নিশানায় ছিলেন মুশারফরা
আজ দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে জেলা বিচারক পুনম এ বাম্বার এজলাসে হাজির করা হয় গতকাল গ্রেফতার হওয়া সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী কাশ্মীরি নেতাকে। গতকাল শ্রীনগর এবং দিল্লি থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছিলেন এনআইএ গোয়েন্দারা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কট্টরপন্থী হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জামাই ফান্টুশ গিলানিও।
আদালতে এনআইএ-র আইনজীবী জানান, পাকিস্তান থেকে হাওয়ালা-সহ বিভিন্ন বেআইনি পথে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের কাছে টাকা এসেছে। তাঁরা ওই টাকা যে সব যুবক উপত্যকায় পাথর ছুড়ে ও অন্য উপায়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের দিয়েছেন। ধৃত সাত নেতার সঙ্গে ওই যুবকদের সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন এনআইএ কৌঁসুলি। ওই যুবকদের মধ্যে ৬০ জনকে গোয়েন্দারা চিহ্নিত করেছেন বলেও জানান তিনি। কাশ্মীরে অশান্তিতে পাক আর্থিক মদত নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব দিল্লি। কিন্তু এই প্রথম সেই টাকা ছড়ানোর অভিযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেছে কোনও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
এনআইএ-র কৌঁসুলি জানান, দিল্লি, হরিয়ানা, কাশ্মীরে হানা দিয়ে হাওয়ালা চক্রের মাধ্যমে পাক টাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হাতে আসার প্রচুর তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাই ১৮ দিনের জন্য ওই সাত নেতার এনআইএ হেফাজতের আর্জি জানিয়েছিলেন এনআইএ কৌঁসুলি। কিন্তু বিচারক ১০ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারি সূত্রের খবর, একের পর এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার গ্রেফতারির ফলে চাপ বাড়ছে মেহবুবা মুফতি সরকারের উপরে। ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মতপার্থক্যও বাড়ছে।
জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের একাংশের দাবি, সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার গ্রেফতারির সময়ে খুব একটা সহযোগিতা করেনি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। শেষ পর্যন্ত খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে।