মইন আখতার কুরেশি
উত্তরপ্রদেশের রামপুরে ছোট্ট একটা মাংসের দোকান দিয়ে শুরু। সেখান থেকে ফুলেফেঁপে পরে পেল্লাই রফতানি ব্যবসা। মাত্র কয়েক বছরেই। ইউপিএ আমল থেকেই তাঁর নাম জড়িয়েছে আয়কর ফাঁকি, হাওয়ালা এমনকী সন্ত্রাসের মামলাতেও। অবশেষে ২০০ কোটি টাকা তছরুপের মামলায় ইডির জালে ধরা পড়লেন সেই বিতর্কিত মাংস-ব্যবসায়ী মইন আখতার কুরেশি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই কুরেশিকে গত কাল রাতে দিল্লির অফিসে ডেকে পাঠায় ইডি। গোয়েন্দাদের দাবি, এ দিনও তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি। আর তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কুরেশিকে আজ ৩ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির এক আদালত।
এ বার টানা জেরার পালা। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হবে কি না, ধন্দে ইডি-রই একাংশ। আয়কর দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৫-য় কুরেশির বিরুদ্ধে প্রথম আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করে ইডি। তার পর চলতি বছরে একই অভিযোগে আরও একটি মামলা। এই এফআইআরে আবার সিবিআই-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর এ পি সিংহেরও নাম রয়েছে। ভায়া ব্ল্যাকবেরি মেসেঞ্জার সিংহের সঙ্গে কুরেশির যাবতীয় কথোপকথনও খতিয়ে দেখছে ইডি।
২০১৫-র মামলা শুরুর পরেই দীর্ঘ সময় গা-ঢাকা দিয়েছিলেন কুরেশি। আয়কর দফতরের মতে, বিদেশে মাংস রফতানির সুযোগেই হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা লেনদেনের চক্র গড়ে তোলেন কুরেশি। যার মাধ্যমে গত কয়েক বছরে কয়েকশো কোটি টাকা বেআইনি ভাবে বিদেশে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছে কেন্দ্র।
ইউপিএ তো বটেই, এনডিএ জোটেরও বহু শীর্ষ নেতার সঙ্গে কুরেশির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। ইডি-র দাবি, এই রাজনৈতিক যোগাযোগ কাজে লাগিয়েও বেআইনি ভাবে লন্ডন, দুবাই-সহ ইউরোপের একাধিক শহরে ব্যবসা বাড়ান কুরেশি। এবং সেই সূত্রেই চলতে থাকে টাকা তোলা এবং পাচার। বিদেশি মুদ্রা আইনেও (ফেমা) মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৫-য় কুরেশির হেফাজতে ২০ কোটিরও বেশি কালো টাকার হদিস পায় আয়কর দফতর। তখনই তারা জানায়, দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে বেনামে ১১টিরও বেশি লকার রয়েছে তাঁর।