কাশ্মীরে বাসে হানায় নিহত আট জওয়ান

গুলি ছোড়ার প্রশিক্ষণ সেরে ফেরার সময়ে জঙ্গিদের হামলায় কাশ্মীরে নিহত হলেন ৮ সিআরপিএফ জওয়ান। পাল্টা হামলায় নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি। ২০১৩ সালে হায়দরপোরা-শ্রীনগর সড়কে সেনা কনভয়ে হানা দিয়েছিল জঙ্গিরা। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে সেই হানার মিল পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৮:৩৮
Share:

জঙ্গি খতম। ফিরছেন আহত জওয়ান। — নিজস্ব চিত্র।

গুলি ছোড়ার প্রশিক্ষণ সেরে ফেরার সময়ে জঙ্গিদের হামলায় কাশ্মীরে নিহত হলেন ৮ সিআরপিএফ জওয়ান। পাল্টা হামলায় নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি। ২০১৩ সালে হায়দরপোরা-শ্রীনগর সড়কে সেনা কনভয়ে হানা দিয়েছিল জঙ্গিরা। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে সেই হানার মিল পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

সিআরপিএফ সূত্রে খবর, পুলওয়ামা জেলার পাম্পোরের ফ্রেস্তবালে এ দিন গুলি ছোড়ার প্রশিক্ষণ সেরে একটি বাসে চড়ে ফিরছিলেন ৫৮ জন জওয়ান। উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি থেকে হঠাৎ নেমে গুলি ছুড়তে শুরু করে দুই জঙ্গি। প্রথমে নিহত হন বাসের চালক। তার পরে বাস লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা।

এমন ক্ষেত্রে জওয়ান ভর্তি বাসের সামনে থাকে বাহিনীর ‘রোড ওপেনিং পার্টি’। সড়কে কোনও বিপদের সম্ভাবনা আছে কিনা তা দেখাই ‘রোড ওপেনিং পার্টিতে’ থাকা জওয়ানদের কাজ। এ দিন হামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই দলে থাকা জওয়ানরা পাল্টা গুলিবর্ষণ শুরু করেন। তাতেই খতম হয় দুই জঙ্গি।

Advertisement

এর পরে আহত জওয়ানদের সেনার বেস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিআরপিএফের তরফে জানানো হয়েছে, পাঁচ জনকে হাসপাতালে আনার পরেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে মারা যান আরও তিন জন। আহতের সংখ্যা ১৮।

ঘটনাস্থলে যান সিআরপিএফের আইজি নলিন প্রভাত ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি কে রাজেন্দ্র। আরও ২ জঙ্গি বাহিনীর হাত এড়িয়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দেন সিআরপিএফের ডিজি কে দুর্গাপ্রসাদ। তাঁকে আগামিকাল কাশ্মীর যেতেও নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আক্রান্ত সিআরপি-র বাস। শনিবার পাম্পোরে। ছবি: এএফপি।

নিহত দুই জঙ্গিই পাকিস্তানি বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা হামলার দায় স্বীকারও করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, গ্রীষ্মকালে উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়া নতুন কিছু নয়। এখন বাহিনীর উপরে হামলা চালিয়ে আতঙ্ক বজায় রাখার দিকে জোর দিয়েছে পাক জঙ্গিরা। সে ক্ষেত্রে সহজে হামলা চালিয়ে অনেক প্রাণহানি ঘটানো যায় এমন লক্ষ্যবস্তুই বেছে নিচ্ছে তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘পাম্পোরে বাসে থাকা জওয়ানরা অভিযানে যাচ্ছিলেন না। ফলে তাঁদের বাসে বুলেটপ্রুফ আবরণও ছিল না। তাই ৮ জন জওয়ানকে খুন করতে পারল জঙ্গিরা।’’

গোয়েন্দাদের মতে, ২০১৩ সালে মনমোহন সিংহের কাশ্মীর সফরের সময়ে প্রথম এই কায়দায় হামলা চালানো হয়। হায়দরপোরা-শ্রীনগর সড়কে সেনার কনভয়ে সেই হানায় ৮ জন জওয়ান নিহত হন। চলতি মাসের গোড়ায় কাশ্মীরের বিজবেহরা এলাকায় বিএসএফের বাসেও একই কায়দায় হামলা হয়েছে। তাতে প্রাণ হারান দু’জন জওয়ান।

এ দিনই অনন্তনাগ কেন্দ্র থেকে উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরের স্বার্থের বিরোধী শক্তি সব সময় এমন হামলা চালিয়ে শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন