ব্রু-দের ফেরাতে জট, চিন্তায় নির্বাচন কমিশন

গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে ১৯৯৭ সালে মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় পালিয়ে গিয়েছিলেন ব্রু গোষ্ঠীর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বিভিন্ন সময়ে ছ’বার তাঁদের মিজোরামে ফেরানোর চেষ্টা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:১৪
Share:

ফাইল ছবি

প্রবল দোটানায় নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

গত কুড়ি বছর ধরে মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় শরণার্থী হয়ে থাকা ব্রু বা রিয়াং জনজাতি শরণার্থীদের জন্য ত্রিপুরার মাটিতে ভোটের ব্যবস্থা করে এসেছে কমিশন। চলতি মাসেই ওই ব্রু জনজাতিদের ত্রিপুরা থেকে মিজোরামে ফেরৎ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকার ও কেন্দ্র। এ দিকে বছর শেষেই বিধানসভা নির্বাচন মিজোরামে। ফলে ব্রু-দের মিজোরামের মাটিতে ভোট করানোর প্রস্তুতি শুরু করেছিল কমিশন। কিন্তু পুনর্বাসন চুক্তির দু’সপ্তাহের মাথায় ত্রিপুরা থেকে মিজোরামে যেতে বেঁকে বসেছেন ব্রু শরণার্থীরা। ফলে কেন্দ্র-রাজ্যের মতোই অথৈ জলে কমিশনও। প্রায় ১০ হাজার ভোটার কোথায় ভোট দেবেন, তাই এখন কমিশনের মাথাব্যথার কারণ।

গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে ১৯৯৭ সালে মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় পালিয়ে গিয়েছিলেন ব্রু গোষ্ঠীর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বিভিন্ন সময়ে ছ’বার তাঁদের মিজোরামে ফেরানোর চেষ্টা হয়। তাঁদের মিজোরামে ফেরানোর বিষয় নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে ফের বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্র এবং ওই দুই রাজ্য। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে ব্রু-দের ঘরে ফেরাতে রাজি হয় মিজোরাম। কেন্দ্রের উপস্থিতিতে চুক্তিও হয় মিজোরাম ও ত্রিপুরা সরকারের। কিন্তু দু’সপ্তাহের মধ্যেই ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে মিজোরাম ব্রু ডিসপ্লেসড পিপল্‌স ফোরাম (এমবিডিপিএফ)। ওই সংস্থার সচিব ব্রুনো মাশহ অভিযোগ করেন, ‘‘পাঁচ হেক্টর জমি দেওয়া ছাড়াও আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিছুই মানা হচ্ছে না।’’

Advertisement

সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিজোরামের স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত সচিব লালবিয়াজামা বলেন, ‘‘একের পর এক দাবি বাড়িয়ে যাচ্ছে ব্রু গোষ্ঠী। যার মধ্যে কয়েকটি মেনে নেওয়া একেবারেই অসম্ভব।’’ বিষয়টি কেন্দ্রকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে গোটাটাই দিল্লির উপর ছেড়ে দিয়েছে মিজো সরকার। যদিও ব্রু-দের উস্কানির পিছনে ত্রিপুরার সরকারি আমলাদের একাংশের হাত রয়েছে বলে মনে করছে সে রাজ্যের সরকার। অভিযোগ, শরণার্থীরা চলে গেলে তাদের জন্য আসা সরকারি সাহায্যের ভাগ হাতছাড়া হয়ে যাবে, বন্ধ হয়ে যাবে দুর্নীতি। উপরি আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওযার ভয় থেকেই জনজাতিদের মিজোরামে না যাওয়ার জন্য উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন কিছু সরকারি আমলা ও ব্রু গোষ্ঠীর কিছু নেতা। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কথায়, ইতিমধ্যেই তিন জন সরকারি কর্মচারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা ব্রু-দের না যাওয়ার জন্য উস্কানি দিচ্ছিলেন। অভিযুক্তদের বরখাস্ত করার বিষয় খতিয়ে দেখছে ত্রিপুরা সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন