তেজস্বী যাদব। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে নেওয়া।
পোশাকি নাম, ‘বিহার কা তেজস্বী প্রাণ’ (বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, বিহারের জন্য তেজস্বীর সঙ্কল্প)। আদতে, বিহারের বিজেপি বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধনের নির্বাচনী ইস্তাহার। মঙ্গলবার, জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী সহযোগীদের নিয়ে সেই ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন। তাতে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, বিহারের বিধানসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’র ‘বিহার সংস্করণ জিতলে সে রাজ্যে ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।
আনুষ্ঠানিক ভাবে অবশ্য ইস্তাহার না বলে ‘তেজস্বীর সঙ্কল্প’কে ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ (দিশানির্দেশ নথি) হিসেবেই চিহ্নিত করেছে বিরোধী শিবির। সেখানে অঙ্গীকার করা হয়েছে, মহাগঠবন্ধন ভোটে জিতে সরকার গঠন করার ২০ দিনের মধ্যে প্রতি পরিবারের এক জন করে সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। রাজ্যে কর্মরত কয়েক লক্ষ জীবিকা দিদি (স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা) এবং অন্যান্য চুক্তিবদ্ধ কর্মীদের ২০ মাসের মধ্যে স্থায়ী পদমর্যাদা দেওয়া, আবগারি নীতি (মদ নিষিদ্ধকরণ) পুনর্বিবেচনা, মহিলাদের মাসে ২৫০০ টাকা ভাতা, ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, ২০০ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে নতুন আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতিও ইস্তহারে দিয়েছে বিরোধী জোট।
গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতিক্রমে লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তেজস্বীদের প্রতিশ্রুতিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে চিহ্নিত করেছে বিজেপি। বিহারে মহিলা-ভোটে গত এক দশকে প্রায় একচেটিয়া ভাগ বসিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। দু’দশক আগেই মহিলাদের জন্য পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ। পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনায় নগদ অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্কে পাঠানোর মতো প্রকল্প হাতে নেন। ফলে গত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে বিহারে মেয়েদের ভোট পেতে কোনও সমস্যা হয়নি নীতীশের। এ বার সেই ভোট ব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে ‘জীবিকা দিদি’দের বেতন ও সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তেজস্বী। প্রসঙ্গত, এ বার বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনে দু’দফায় ভোট হবে। ৬ নভেম্বর প্রথম দফার ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর ১২২টি আসনে। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর। মূল লড়াই এনডিএ এবং আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের জোট মহাগঠন্ধনের মধ্যে।