ট্রেনের ধাক্কায় ফের মৃত্যু হাতির

হাতির মৃত্যু ঠেকাতে সদ্য বৈঠক করে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন দফতর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। কিন্তু ফের ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেল তিনটি হাতি। এবারের ঘটনাও সেই হোজাই-লামডিং সেকশনেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫২
Share:

হাতির মৃত্যু ঠেকাতে সদ্য বৈঠক করে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন দফতর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। কিন্তু ফের ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেল তিনটি হাতি। এবারের ঘটনাও সেই হোজাই-লামডিং সেকশনেই।

Advertisement

উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা জানান, গত কয়েক দিন ধরে প্রায় ৯০টি হাতির একটি দল আশপাশের গ্রামে ঘুরছে। গত রাতে গ্রামবাসীরা পটকা ফাটিয়ে হাতি তাড়ানোর সময় তারা লাইন পার হয়ে পালাতে থাকে। রেল ও বন দফতরের বৈঠকের পরে ওই সেকশনে সব স্টেশন মাস্টারের নম্বর বন দফতরকে দেওয়া হয়েছে। বন দফতর আমাদের খবর দেয়, গুয়াহাটি থেকে ১৩৭ কিলোমিটার দূরত্বে হাতিরা লাইন পার হচ্ছে। ওই স্থানটি ‘হাতি করিডর’ না হলেও ট্রেনের গতি কমাতে বলা হয়।

কিন্তু এ দিন ভোর চারটে নাগাদ কামপুর ও যমুনামুখের মধ্যবর্তী ১২৪ কিলোমিটার এলাকায় একটি ইঞ্জিনের সঙ্গে তিনটি হাতির ধাক্কা লাগে। ইঞ্জিনটি ভাল রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লাইন আটকে থাকায় রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ কয়েকটি ট্রেন খানিকক্ষণ আটকে থাকে। ওই এলাকায় হাতি পার হওয়ার খবর বন দফতর রেলকে দেয়নি। ঘটনাস্থলে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি ও একটি শাবকের মৃত্যু হয়। জখম হয় আরও একটি হাতি। সকালে পশু চিকিৎসকরা এসে জখম হাতিটির চিকিৎসা শুরু করে। পরে সেও মারা যায়। এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর এই একই রেলপথে, হোজাইয়ে বিবেক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মারা যায় তিনটি হাতি ও একটি সদ্যোজাত শাবক। তার দু’দিনের মধ্যেই গোয়ালপাড়ায় মালগাড়ির ধাক্কায় একটি হাতি মারা যায়, একটি হাতি জখম হয়। পরে তারও মৃত্যু হয়। ঘটনা দু’টির পরে উত্তর-পূর্ব রেলের সমালোচনা করে বনমন্ত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্ম জানান, বারবার বলা সত্ত্বেও হাতি করিডরে ট্রেনের গতি কমানো হচ্ছে না। রেল অবশ্য দাবি করে, যে স্থানে দুর্ঘটনা হয়েছে, সেগুলি নথিভুক্ত হাতি করিডর নয়।এর পর গত বৃহস্পতিবার রেল, বন দফতর, জেলা প্রশাসন বৈঠক করে। সিদ্ধান্ত হয়, সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে তৈরি করা হবে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। হাতি বেরনোর খবর পেলেই তা রেলকে জানানো হবে। রেল ওই পথে আসা চালকদের সতর্ক করবে। জেলাশাসকও গ্রুপে থাকবেন। কিন্তু তা চালু হওয়ার পরেও ফের এই ঘটনা ঘটল।

Advertisement

বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘খুব মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনার জন্য পুরোপুরি দায়ী রেল বিভাগ। তাদের তরফে এখনও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছি না আমরা। ওই ট্রেনের চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে।’’ তিনি বলেন, নগাঁওয়ের জেলাশাসক ঘটনার তদন্ত করবেন। দোষী হলে বনকর্তারাও শাস্তি পাবেন বলে মন্ত্রী জানান। এ দিনের ঘটনার পরে অবিলম্বে হাতি পারাপার করে এমন সব রেলপথে ‘স্পিড গান’ বসানো ও ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী। রেলপথে সেন্সর বসানোর উপরেও জোর দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement