National News

অফিসের বাইরে আর ‘বস’-এর ফোন ধরতে হবে না! বেসরকারি বিল সংসদে

এর মধ্যে রয়েছে, অফিসের বাইরে কর্মীকে তাঁর ‘বস’ ফোন করতেই পারেন। কিন্তু সেই কর্মী ফোন না-ও ধরতে পারেন বা ধরলেও উত্তর দিতে না-ও পারেন। ই-মেলের ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:১৭
Share:

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ

কেমন হত, যদি কাজের সময়ের বাইরে বা ছুটির দিনে অফিসের ফোনে জেরবার না হতে হয়? অথবা উত্তর না দিলেও কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার না থাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের? শুনতে যতই অবাস্তব মনে হোক, এমনই একটি প্রাইভেট বিল সংসদে আনলেন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে। সুপ্রিয়ার প্রস্তাব, এমন আইন আনা হোক, যাতে কর্মজীবন এবং পারিবারিক জীবনের ভারসাম্য নষ্ট না হয়। যদিও এই ধরনের কোনও বিল এ দেশে আনা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে প্রচুর প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে।

Advertisement

শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে এই প্রাইভেট বিলটি লোকসভায় পেশ করেন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে। বিলের পক্ষে তাঁর যুক্তি, বহু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বেসরকারি ক্ষেত্রে অফিসের কাজের চাপে ব্যক্তিগত জীবন বলে কার্যত আর কিছু থাকে না। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই অফিসের কাজের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ফোন ধরা, ই-মেলের উত্তর দেওয়া তো রয়েছেই, এমনকি, বাড়িতেও ল্যাপটপ, কম্পিউটার নিয়ে বসে পড়তে হয় অফিসের কাজে। আবার ফোন, ই-মেলের উত্তর না দিলে শৃঙ্খলাভঙ্গের কোপেও পড়তে হয়। সুলে বলেন, ‘‘পরিবারের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের ভারসাম্য রক্ষা করতেই ‘ডিসকানেক্ট’ এবং ‘কল রিসিভ’ না করার অধিকার দেওয়া দরকার।

কী প্রস্তাব দিয়েছেন শরদ পওয়ার কন্যা সুপ্রিয়া? বেসরকারি কর্মীদের মূল অধিকারের অংশ প্রস্তাব করা হয়েছে হয়েছে ৭ নম্বর ধারায়। এর মধ্যে রয়েছে, অফিসের বাইরে কর্মীকে তাঁর ‘বস’ ফোন করতেই পারেন। কিন্তু সেই কর্মী ফোন না-ও ধরতে পারেন বা ধরলেও উত্তর দিতে না-ও পারেন। ই-মেলের ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য হবে। এই সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনার প্রশ্নই নেই। এছাড়াও অন্যান্য ধারাগুলিতে কর্মী কল্যাণ কমিটি গঠন, মালিক পক্ষের সঙ্গে তাঁদের নিয়মিত বৈঠক করার মতো বিষয়েও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিলে।

Advertisement

সুপ্রিয়ার বিলে আরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, বেসরকারি সংস্থায় এই সব কারণে কাজের সমস্যা হলে তা মেটানোর জন্য কর্তৃপক্ষকেই পদক্ষেপ করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি বেসরকারি সংস্থাকে তাদের কাজের ধরন বা প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মপদ্ধতি ঠিক করে নিতে হবে, যাতে অফিসের বাইরে থাকা কর্মীদের ‘বিরক্ত’ না করেও কাজে কোনও প্রভাব না পড়ে।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গেল অধোয্যা মামলার শুনানি

আরও পড়ুন: বিরোধীদের ঝাঁঝালো আক্রমণ সত্ত্বেও রাজ্যসভার সায় উচ্চবর্ণের সংরক্ষণে

সুপ্রিয়ার বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ‘শাস্তি’রও। কোনও সংস্থা এই আইন না মানলে তাদের কর্মীদের মাইনের এক শতাংশ জরিমানা হিসেবে দিতে হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এড়াতে এবং এর অপকারিতা সম্পর্কে কর্মীদের সচেতন করার জন্য কাউন্সেলিং করার প্রস্তাবও রয়েছে রাইট টু ডিসকানেক্ট বিলে।

কিন্তু সংসদে এরকম প্রচুর বিল আনেন সাংসদরা। তার মধ্যে অনেকগুলিই সংসদে গৃহীত হয় না। ফলে পাশ হওয়ার প্রশ্নও থাকে না।

সারা বিশ্বের মধ্যে ফ্রান্সই একমাত্র দেশ, যেখানে এই নিয়ম চালু রয়েছে। নিউইয়র্কেও প্রায় একই রকম বিল আনা হয়েছে। এই ধরনের কোনও আইন আনা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে জার্মানিতেও।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন