প্রতীকী ছবি
ইভিএম নিয়ে লন্ডন থেকে ওঠা ঝড় আছড়ে পড়ল দিল্লিতে। নিজেকে সাইবার-বিশেষজ্ঞ দাবি করা সইদ শুজা নামে এক ব্যক্তি গত কাল আমেরিকায় বসে লন্ডনে এক ভিডিয়ো কনফারেন্সে দাবি করেন, ভারতের ইভিএমে কারচুপি করা যায়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে জেতাতে বিজেপি তা করেছিল। এই রহস্য যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য শুজার এগারো জন সঙ্গীকে খুন করা হয়। গুলি লাগে তাঁরও। আমেরিকায় পালিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন তিনি। শুজার আরও গুরুতর অভিযোগ, মোদী সরকারের মন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডে এ কথা জানতেন তিনি তা ফাঁস করতে চলেছেন বুঝে তাঁকে ‘খুন’ করা হয়। নির্বাচন কমিশন আজ দিল্লি পুলিশকে গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে বলেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষই চাইছে সিবিআই তদন্ত হোক এ নিয়ে।
এ সব অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি শুজা। কিন্তু লন্ডনের সেই সাংবাদিক বৈঠকে কপিল সিব্বলের উপস্থিতি নিয়ে তেড়েফুঁড়ে ওঠে বিজেপি। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, রাহুল গাঁধীই পাঠিয়েছেন কপিলকে। দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনকে বদনাম করতে। আর এইমসের যে চিকিৎসক মুন্ডের ময়নাতদন্ত করেছিলেন, তাঁর বক্তব্য — খুনের কোনও সম্ভাবনাই নেই। তা সত্ত্বেও শুজা প্রয়াত নেতার নামে আজগুবি কথা বলছেন। রাহুল গাঁধী হারের কারণ খুঁজতেই ইভিএমকে ঢাল করছেন। সিব্বল লন্ডনে ও ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির থাকায় অস্বস্তি বেড়েছে কংগ্রেসের। তাই আজ দেশে ফেরার পর কপিলকেই আত্মপক্ষ সমর্থনে এগিয়ে দেয় দল। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি গোটা ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করেন। তদন্ত চাইলেন শুজার গুরুতর অভিযোগগুলি নিয়ে।
শুজার দাবি তিনি ইভিএম প্রস্তুতকারী সংস্থা ইসিআইএল-এর কর্মী ছিলেন। ইসিআইএল জানিয়েছে, এ নামে কোনও কর্মী ছিল না তাদের। আর সিব্বলের বক্তব্য, আয়োজকদের আমন্ত্রণেই ব্যক্তিগত সফরে লন্ডনে
গিয়েছিলেন। আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, শুজা ইভিএম প্রস্তুতকারী সংস্থায় কাজ করতেন। ইভিএম কারচুপিতে শামিল শুজা-সহ ১৩ জনকে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়। বিজেপির নেতা কিষাণ রেড্ডির আত্মীয়ের গেস্ট হাউসে ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষে মারা হয় ১১ জনকে। তিনি কোনও রকমে আমেরিকায় পালিয়ে বাঁচেন। গোটা বিষয়টি কল্পবিজ্ঞানের কাহিনির মতো। ফলে এর তদন্ত হওয়া উচিত।
বিজেপির যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই কিষাণ রেড্ডি বলেছেন, ‘‘গোটা ঘটনাটি ঘটেছে কংগ্রেস আমলে। ১১ জন একসঙ্গে মারা যাওয়ার কোনও রেকর্ড সরকারের কাছে নেই। তবে অভিযোগ যখন উঠেছে, তাই সিবিআইকে দিয়ে এর তদন্ত করানো হোক।’’ দুর্ঘটনায় মৃত মুন্ডের ভাইপো ধনঞ্জয়ও তদন্তের দাবি তুলেছেন।