কেউ ক্ষুব্ধ কেউ বা দুশ্চিন্তায়

উত্তেজনার পর্দা কতটা চড়েছে, তা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের আচরণে স্পষ্ট। গত কাল ছিল তাঁর জন্মদিন। এ দিকে জল্পনা, তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হবে। বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে গত কাল দেখেন, টুইটারে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৭
Share:

অনিশ্চয়তা, বুক ধুকপুক, কিছুটা ক্ষোভও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদল ঘিরে জমজমাট শাহি দিল্লির চিত্রনাট্য!

Advertisement

উত্তেজনার পর্দা কতটা চড়েছে, তা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের আচরণে স্পষ্ট। গত কাল ছিল তাঁর জন্মদিন। এ দিকে জল্পনা, তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হবে। বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে গত কাল দেখেন, টুইটারে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আহ্লাদে আটখানা কৃষিমন্ত্রী তড়িঘড়ি রিটুইট করে মোদী বন্দনা সেরেছেন! স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন মানে তাঁর চাকরি সুরক্ষিত! তাঁর পরিবারের সদস্যেরা অবশ্য অতটা নিশ্চিন্ত নন। তাঁরা বলছেন, জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠানোটা তো নিছক রুটিন সৌজন্য।

আরও পড়ুন: আজ মোদীর মন্ত্রী বদল

Advertisement

পদত্যাগ করে মন খারাপ রাজীব প্রতাপ রুডির। ঘনিষ্ঠ মহলে জানাচ্ছেন, তাঁর কাজ প্রশংসিত। তবুও কেন খাঁড়া নামলো? আর এক ঠাকুর নেতা রাজনাথ সিংহও মর্মাহত রুডির পদত্যাগে। কিন্তু আপাতত শোক গোপন রেখেছেন। এই পিছল উইকেটে ভুল করতে চান না তিনি!

রাজনৈতিক সূত্রে দাবি, ভাল কাজ করা মন্ত্রীদের কেউ কেউ শিল্পপতিদের থেকে টাকা তুলেছেন দলের নামে। অমিত শাহ এক মন্ত্রীর কাছে জানতেও চান, টাকা কার জন্য তুলছেন? সেই মন্ত্রী আমতা আমতা করে বলেছেন, তিনি দলের জন্যই টাকা তুলছিলেন, শিগগিরই দলকে সেই টাকা দিয়ে দিতেন। খুশি হননি অমিত। ফলাফল যা হওয়ার হয়েছে।

নির্মলা সীতারমনের বাণিজ্য মন্ত্রকের কাজ প্রশংসিত। কিন্তু তাঁর উইকেটও নাকি পোক্ত নয়। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, নির্মলার আচরণে নেতা-মন্ত্রীদের পাশাপাশি মন্ত্রকের অফিসারেরাও ক্ষুব্ধ। একই পরিস্থিতি উমা ভারতীরও। যদিও কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, তিনি অগ্নিকন্যা ছিলেন, এখন জলকন্যা হয়ে গিয়েছেন! স্নায়ুর লড়াই লড়ছেন নিতিন গডকড়ী। রেল হোক বা না হোক, গোটা পরিবহণ মন্ত্রকটিই নিজের কাছে রাখতে চাইছেন। গত দশ দিন ধরে নিতিন নিজের মন্ত্রকে নিয়মিত যাচ্ছেন না।

তবে প্রশান্তির ছাপ কলরাজ মিশ্রের মুখে। পদত্যাগ করেও ফুরফুরে। সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আমার বয়স ৭৫। কিন্তু আমি সক্রিয়। প্রধানমন্ত্রীও কাজে খুশি। কিন্তু আমি ওঁকে বললাম, মন্ত্রীদের বয়সের সময়সীমা যখন নির্ধারিত করে দেওয়াই হয়েছে, আমারও ছাড়া উচিত।’’ রাজ্যপাল হওয়ার আশ্বাস মিলেছে? কলরাজ শুধু জানাচ্ছেন, তিনি দল এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুগত!

সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ, নিতিন গডকড়ী এবং অরুণ জেটলি কাল বসেছিলেন রদবদল নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে। দেখা গেল, কারও কাছেই কোনও খবর নেই! প্রধানমন্ত্রী এঁদের কাউকেই কিছু জানাননি। অগত্যা অন্য তিন জনের উপস্থিতিতে সরসঙ্ঘঘচালক মোহন ভাগবতকে ফোন করেন রাজনাথ। সূত্রের খবর, ভাগবত আশ্বাস দিয়েছেন, এমন কিছু করা হবে না যাতে তাঁরা জলে পড়েন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন