এই সেই র্যাঞ্চো ওয়াল।
স্কুলটায় ঢুকলে যেন আজও র্যাঞ্চোর গলার আওয়াজ প্রতিধ্বনি হতে থাকে পর্যটকদের কানে। দেওয়াল জুড়ে র্যাঞ্চোর স্মৃতি মাখামাখি। ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর ওই স্কুলের তরফে যে দেওয়ালের নাম রাখা হয়েছিল ‘র্যাঞ্চো ওয়াল’ বা ‘দি ইডিয়টিক ওয়াল’। সেই দেওয়ালের কোথাও ‘অল ইজ ওয়েল’, কোথাও আবার বিখ্যাত সেই বাল্ব ঝুলছে। সব মিলিয়ে লাদাখের লে শহরের ড্রুক পদ্মা কার্পো স্কুল যেন পর্যটকদের ঢুঁ মারার সেরা জায়গা হয়ে উঠেছিল বিগত কয়েক বছরে। আর এত পর্যটকদের সামলাতেই নাস্তানাবুদ স্কুলের প্রিন্সিপাল স্ট্যানজিন কুনজাঙ্গ।
মাঝে একসময়ে গুজব রটে, ওই দেওয়ালটাই নাকি ভেঙে দিতে চলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিপুল পর্যটকদের আনাগোনা কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, বলেও রটনা রটে। কিন্তু স্কুলের তরফে সাফ জানানো হয়েছে যে, স্কুল থেকে অনতিদূরেওই দেওয়ালের আদলেই তৈরি করা হচ্ছে আর একটি দেওয়াল। মূলত ভূমিকম্পের ভয় থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে।
ড্রুক পদ্মা কার্পো স্কুলের প্রিন্সিপাল স্ট্যানজিন কুনজাঙ্গের কথায়, ‘‘স্কুল থেকে ২০০-৩০০ মিটারের মধ্যেই আমরা ওই একই দেওয়াল তৈরি করছি। আসলে রোজ অগুনতি পর্যটক আসছেন ওই দেওয়াল দেখতে। আর সেটা সামলানো আমাদের পক্ষে সত্যিই দুষ্কর হয়ে যাচ্ছিল।’’
আরও পড়ুন: কেদারনাথের স্কুলগুলো সাউন্ডপ্রুফ করা হচ্ছে, কেন জানেন?
আরও পড়ুন: কর্মীদের ৩ কোটি টাকার মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি উপহার! ফের চমক
স্ট্যানজিন আরও বলছেন, ‘‘ওই সিনেমার পরেই স্কুলের জনপ্রিয়তা হু হু করে বেড়ে যায়। মানুষজন লাদাখ বেড়াতে এলে এই স্কুলে আসবেনই। আমাদের মনে হয়েছিল, যে কারণে এই অঞ্চলে স্কুল খোলা হয়েছে, সেই কারণটাই যেন আস্তে আস্তে উধাও হয়ে যাচ্ছে।শুধু যে পড়াশোনা থেকেই ছাত্রদের মন চলে যাচ্ছে তাই নয়, সঙ্গে স্কুলটা যেন সারাদিন পর্যটকদের ভিড়ে খেলার মাঠ মনে হচ্ছে।’’
স্কুলের ডিজাইন এবং কন্সট্রাকশনের প্রোজেক্ট ম্যানেজার র্যাচেল গ্লিন বলেছেন, ‘‘পর্যটকদের এক মুহূর্তের জন্য স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে তাঁদের সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে দীর্ঘক্ষণ ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টি বন্ধ করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই পর্যটকরা নতুন জায়গায়গিয়েই ‘র্যাঞ্চো ওয়াল’ চাক্ষুষ করতে পারবেন।’’
তবে ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে কিন্তু একটি দৃশ্যেই দেখা গিয়েছিল দেওয়ালটি। ছাত্রদের কুবুদ্ধিতে এই দেওয়ালেই ইলেকট্রিক শক খেয়েছিলেন চালাক ছাত্র চতুর।
১৯৮৮ সালে খুলেছিল এই ড্রুক পদ্মা কার্পো স্কুল। ২০১০ সালে বন্যা আর ধসের কারণে এই স্কুলের অনেকাংশে বিরাট ক্ষতি হয়েছিল। পরবর্তী কালে ধীরে ধীরে সারানো হয় স্কুলের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)