Delhi Bomb Blast

কেউ চাঁদনিতে যান যাত্রীকে নামাতে, কেউ দোকানের মালপত্র কিনতে! বিস্ফোরণে রোজগেরেদের হারিয়ে দিশাহারা পরিবার

নোমানের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের শামলিতে। প্রসাধনীর ব্যবসা রয়েছে তাঁর। সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদনি চকে সেই মালপত্রই কিনতে গিয়েছিলেন। অশোক দিল্লি পরিবহণ কর্পোরেশন (ডিটিসি)-এর বাসের কন্ডাক্টর। চাঁদনি চকে গিয়েছিলেন এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:০৫
Share:

দিল্লি বিস্ফোরণে স্বজনদের হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। সেই রোজগারের কাজেই সোমবার সন্ধ্যায় পঙ্কজ সাইনি গিয়েছিলেন দিল্লির চাঁদনি চকে। আর কোনও দিন ঘরে ফেরা হবে না ২২ বছরের যুবকের। পরিবারের মাথায় হাত, কাল থেকে খাবে কী? পঙ্কজের মতোই সোমবার সন্ধ্যায় কাজে গিয়ে আর ঘরে ফেরা হয়নি নোমান, অশোক কুমারদের। দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

নোমানের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের শামলিতে। প্রসাধনীর ব্যবসা রয়েছে তাঁর। সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদনি চকে সেই মালপত্রই কিনতে গিয়েছিলেন। অশোক দিল্লি পরিবহণ কর্পোরেশন (ডিটিসি)-এর বাসের কন্ডাক্টর। চাঁদনি চকে গিয়েছিলেন এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করতে। প্রাণ গিয়েছে দু’জনেরই।

ক্যাবচালক পঙ্কজের বাড়ি বিহারে। ২২ বছরের যুবক পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাঁর দেহ নিতে মঙ্গলবার দিল্লির লোকনায়ক হাসপাতালে গিয়েছেন বাবা। পুত্রের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন। তবে বিচারের দাবি থেকে সরছেন না প্রৌঢ়। তিনি বলেন, ‘‘কী বলব? চাঁদনি চকে এক যাত্রীকে নামাতে গিয়েছিল। তখনই বিস্ফোরণ। সরকারের থেকে ন্যায়বিচার চাইছি। আশা করছি, মিলবে।’’

Advertisement

অশোকের বাড়ি আদতে উত্তরপ্রদেশের আমরোহায়। স্ত্রী এবং চার সন্তানকে নিয়ে থাকেন দিল্লির জগৎপুরে। পরিবারের মোট আট জন তাঁর উপরে নির্ভরশীল। সোমবার সন্ধ্যায় আমরোহারই লোকেশকুমার গুপ্তের সঙ্গে চাঁদনি চকে দেখা করতে গিয়েছিলেন অশোক। বিস্ফোরণের ঘণ্টা কয়েক পরে নিহতের তালিকায় তাঁর নাম দেখেন তুতো ভাই। তিনি জানান, অশোক বাইকে চেপে গিয়েছিলেন চাঁদনি চকে। সেই বাইকের খোঁজ মেলেনি। তিনি আরও বলেন, ‘‘গ্রামে অশোকের মা সোমবতী জ্যেষ্ঠপুত্র সুভাষকে নিয়ে থাকেন। সুভাষ অসুস্থ। তাঁদেরও দেখভাল করতেন অশোক। বাড়তি রোজগারের জন্য রাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজও করতেন দাদা।’’

চাঁদনি চকে লোকেশের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অশোক। সেই লোকেশ এসেছিলেন মেট্রোয় চেপে। তাঁর দেহ শনাক্ত করতে লোকনায়ক হাসপাতালে পৌঁছে ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ আত্মীয়।

অন্য দিকে, শামলির নোমান চাঁদনি চকে পাইকারি বাজার থেকে নিজের দোকানের মালপত্র কিনতে গিয়েছিলেন। বয়স মাত্র ২২। তাঁর কাকা ফুকরান বলেন, ‘‘খুব পরিশ্রমী ছিল ও। আমারা আমাদের সন্তান হারালাম। সরকারের কড়া জবাব দেওয়া উচিত, যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না হয়।’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ষড়যন্ত্রের তত্ত্বেই সিলমোহর দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কাউকে রেয়াত করা হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের তদন্ত সংস্থাগুলি এই ষড়যন্ত্রের শিকড় পর্যন্ত যাবে। যারা এই ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা হবে। একজনকেও ছেড়ে দেওয়া হবে না।’’ নিহতদের পরিবারেরও এখন সেটাই দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement