নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। আজ শিলচরে প্রবীণ দিবসের এক অনুষ্ঠানে একের পর এক শহরের নানা হত্যাকাণ্ডের কথা তাঁরা তুলে ধরলেন। বিশেষ করে উঠে আসে শিলচর শহরে গোয়ালাকে সুপারি দিয়ে বৃদ্ধা খুন, লিঙ্ক রোডে মা-ছেলে খুন এবং কিছু দিন আগে বিবেকাননন্দ রোডে বৃদ্ধাকে একা পেয়ে প্রাণে মেরে লক্ষ টাকা লুঠের ঘটনা। কাছাড়ের জেলাশাসক এস লক্ষ্মণন মঞ্চে বসে প্রবীণদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন বটে, তবে তাঁরা যে এতে আশ্বস্ত বোধ করছেন, এমনটা বলা যাচ্ছে না।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আজ এখানে প্রবীণ মিলনোৎসবের আয়োজন করেছিল। সেখানেই নানা ধরনের অসহায়তার কথা তুলে ধরেন প্রবীণেরা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবীণদের লাইনে অন্যদের দাঁড়িয়ে পড়া, ব্যাঙ্কে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া, টিডিএসের নামে বৃদ্ধদের কাছ থেকে টাকা কেটে রাখা, শব্দদূষণ ইত্যাদিও আলোচনায় উঠে আসে। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে বার বার বড় হয়ে ওঠে প্রাণনাশের আশঙ্কা। তাঁদের কথায়, পরিবারের অন্যদের ব্যস্ততার দরুন তাঁরা একা। দুষ্কৃতীরা এরই সুযোগ নেয়। কোনও ঘটনায় খুনি ধরা পড়ে, কোনওটিতে পড়ে না। কয়েকটি ঘটনায় দোষীর কারাদণ্ডও হয়েছে। তবু একই ধরনের কাণ্ড ঘটেই যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা জানান, ১৯৯৪ সাল থেকে তাঁরা প্রবীণ মিলনোৎসব করছেন। এর সুফলও মিলছে। তাঁদের চাপেই ট্রেনের টিকিট, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ-টেলিফোনের বিল দেওয়ার জন্য বৃদ্ধদের পৃথক কাউন্টার তৈরি হয়েছে। শিলচর সিভিল হাসপাতালে বৃদ্ধদের জন্য দশ শয্যার আলদা কক্ষও তৈরি হচ্ছে। এ বার তাঁদের দাবি, পরপর খুনের ঘটনায় প্রবীণদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনকে ভাবতে হবে। কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’-এর ধাঁচে এখানেও একা থাকা বৃদ্ধদের তথ্য সংগ্রহ করুক পুলিশ। এবং তার ভিত্তিতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তাঁরা।