ছেলেধরা বা অপহরণকারীদের খপ্পড়ে পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন হাইলাকান্দির মানুষ। গত এক পক্ষ কালে শিশু-কিশোর অপহরণের চেষ্টার বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ফলে অভিভাবকরা আতঙ্কে। অবশ্য পুলিশের দাবি, ও সব নেহাতই গুজব। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি হাইলাকান্দিতে তৈরি হয়নি।
অটোচালক বদরুল হকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে হাইলাকান্দি আন্দোলনে সরব। অভিযোগ, অপহরণকারী চক্র তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। উদ্ধারের দাবিতে হাইলাকান্দিতে বন্ধও পালিত হয় ক’দিন আগে। কিন্তু বদরুলের খোঁজ মেলেনি আজও। বরং আরও কিছু অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ মিলেছে। আলগাপুর, পাঁচগ্রাম প্রভৃতি এলাকায় মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ছে, শিশু-কিশোর তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আজ দুপুরেও স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলগাপুরে এক স্কুল-ছাত্রকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। দু’দিন আগে একই ধরনের অভিযোগ মেলে পাঁচগ্রামে।
হাইলাকান্দির পুলিশ সুপার প্রণবজ্যোতি গোস্বামী জানিয়েছেন, সব ক’টি ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে। প্রথম দিকে গুজব রটছিল। কিডনি পাচার চক্রের গল্পও ছড়িয়ে পড়ে। সত্যতা দূরে থাক, কোথাও অভিযোগকারীকেই চিহ্নিত করা যায়নি। তবে চার-পাঁচদিন থেকে যে ঘটনাগুলি ঘটছে, সব ক’টি ক্ষেত্রে আতঙ্কে ভুল ভেবে অপহরণের চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। আজ দুপুরের ঘটনায় পুলিশ সুপার নিজে তদন্তে নামেন। ১১ বছর বয়সী স্কুল-ছাত্রটিকে ডেকে কথা বলেন। অভিভাবকদের সামনেই সে জানায়, স্কুল থেকে ফেরার পথে হঠাৎ তার নজরে পড়ে মোটর সাইকেল নিয়ে এক যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। মুখে কাপড় বাঁধা। আতঙ্কে সে অন্য রাস্তা ধরে বাড়ি ফেরে।
এসপি-র প্রশ্নে কিশোরটি অবশ্য জানায়, মোটর সাইকেলে বসা যুবক তার সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। এমনকী, সে অন্য পথে এগোলে ওই যুবক তার পিছুও নেয়নি। পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘আজ বরাক উপত্যকায় প্রচণ্ড গরম। সঙ্গে ধুলোবালিও প্রচুর। অনেকে মুখে রুমাল বেঁধে মোটর সাইকেল চালিয়েছেন। কেউ হয়তো মাঝপথে মোটর সাইকেল দাঁড় করিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাঁকেই সে অপহরণকারী ভেবে নিয়েছে।’’
তিনি গুজবে কান না দিতে সকলকে পরামর্শ দেন। আতঙ্কে ভুল বোঝাবুঝির মত পরিস্থিতির সৃষ্টি যেন না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতেও অনুরোধ জানান। তাঁর বক্তব্য, কোনও কিডনি পাচার চক্র বা ছেলেধরা হাইলাকান্দিতে আসেনি। পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখা সতর্ক রয়েছে।