জিএসটি

রাজ্যের প্রস্তাব মেনে একজোট অন্যরাও

পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে (জিএসটি) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই সুর মেলাল বাকি সব রাজ্য। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সামনে অমিত মিত্র-সহ সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এক হয়ে আপত্তি তুললেন, যে সমস্ত ব্যবসার পরিমাণ বছরে দেড় কোটি টাকার কম সেখানে কেন্দ্র নাক গলাতে পারবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে (জিএসটি) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই সুর মেলাল বাকি সব রাজ্য।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সামনে অমিত মিত্র-সহ সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এক হয়ে আপত্তি তুললেন, যে সমস্ত ব্যবসার পরিমাণ বছরে দেড় কোটি টাকার কম সেখানে কেন্দ্র নাক গলাতে পারবে না।

গত মাসে কলকাতায় অর্থমন্ত্রীদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক পরে তাতে বদল করে বলে, এই ধরনের কোনও সীমারেখা থাকারই দরকার নেই। সব ধরনের ব্যবসাতেই কেন্দ্র ও রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এতেই আপত্তি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে অমিত মিত্রকে এর বিরোধিতা করার নির্দেশ দেন তিনি। আজ অমিত মিত্রর সঙ্গে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম থেকে শুরু করে আঞ্চলিক দল শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও এক সুরে এর বিরোধিতা করেন। বৈঠকে অরুণ জেটলি রাজ্যের আপত্তি শুনলেও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। অমিত মিত্র বলেন, ‘‘ছোট ব্যবসায়ীদের হেনস্থা কমানোর জন্যই বিরোধিতা করছি। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের দু’টি কর দফতরের ইনস্পেক্টররাই তাঁদের হেনস্থা করবেন।’’ অমিতবাবু জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সকলের কথা শুনেছেন। তাঁর আশা, জেটলি এই সমস্যার সমাধান করবেন।

Advertisement

মূল জিএসটি বিলের এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলির নতুন করে অনৈক্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু জিএসটি চালুর জন্য যে সংবিধান সংশোধনী বিলটি রাজ্যসভায় ঝুলে রয়েছে, তা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে সহমত তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র মেনে নিয়েছে, জিএসটি চালু হওয়ার পর রাজ্যগুলির রাজস্বের ক্ষতি হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ করবে তারা। সংবিধান সংশোধনী বিলেই তার উল্লেখ থাকবে। অমিত মিত্র, কেরলের বাম অর্থমন্ত্রী টমাস আইজাকরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের মধ্যে অন্তত সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই। এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে বিল পাশের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সহমত তৈরি করতে হবে।

কংগ্রেস সংবিধান সংশোধনী বিলেই করের হার ১৮ শতাংশে বেঁধে রাখার দাবি তুলেছে। অমিতবাবু বলেন, ‘‘তা সম্ভব নয়। তবে সাধারণ মানুষের উপর যাতে করের বোঝা কমে, তার জন্য নির্দিষ্ট কোনও করের হারের বদলে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত দিন কেন্দ্র ও রাজ্যের যাতে রাজস্ব ক্ষতি না হয়, সে দিকে লক্ষ রেখে করের হার ঠিক করার কাজ চলছিল। এ বার সেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে করের বোঝা কমানোর দিকে লক্ষ রেখে করের হার ঠিক হবে।’’ তবে রাজ্যের বা কেন্দ্রের কর বাবদ আয় যাতে কমে না যায়, সে দিকেও নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন অমিতবাবু। তাঁর যুক্তি, ‘‘মানুষের উপর যদি করের বোঝাই না কমে, তা হলে এত বড় কর সংস্কার করে কী লাভ?’

কংগ্রেসের আর এক দাবি ছিল, শিল্পোন্নত রাজ্যগুলির জন্য বাড়তি ১ শতাংশ কর চাপানো চলবে না। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও এ বিষয়ে একমত। কেন্দ্র-রাজ্যের বিবাদ মেটাতে একটি ব্যবস্থা তৈরির দাবি তুলেছে কংগ্রেস। অর্থমন্ত্রীদের কমিটিরও সিদ্ধান্ত, পৃথক ব্যবস্থা তৈরি হবে। সেই বিষয়ে জিএসটি পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন