JEE Main

জেইই-মেন পরীক্ষার প্রথম দিন ‘নির্বিঘ্নে’, চড়া সুর বিরোধীদের

অতিমারির মধ্যে পরীক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা চড়া সুরেই বেঁধে রাখতে আগ্রহী বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২৩
Share:

দূরত্ব-বিধি মেনেই জেইই-মেন শুরুর প্রথম দিনে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার লাইন পরীক্ষার্থীদের। মঙ্গলবার সল্টলেকে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

পরীক্ষার প্রথম দিন নির্বিঘ্নে কাটায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে কেন্দ্র। কিন্তু বিরোধীদের ধারণা, জোর করে জেইই-মেন এবং নিট-ইউজি আয়োজনের সিদ্ধান্ত আখেরে বুমেরাং হবে মোদী সরকারের পক্ষে। মুখ ফেরাতে শুরু করবেন নতুন প্রজন্মের ভোটারদের একাংশ। তাই সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা (জেইই-মেন) মঙ্গলবার শুরু হয়ে গেলেও অতিমারির মধ্যে পরীক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা চড়া সুরেই বেঁধে রাখতে আগ্রহী বিরোধীরা।

Advertisement

শিক্ষাসচিব অমিত খারে এ দিন বলেন, “নির্বিঘ্নে ও মসৃণ ভাবে (প্রথম দিনের) পরীক্ষা হয়েছে সারা দেশে। সমস্ত রাজ্য সরকার এবং (আয়োজক সংস্থা) এনটিএ-র অফিসারদের সে জন্য ধন্যবাদ।” মাঝে শোনা গিয়েছিল, পরীক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে উত্তরপ্রদেশের দুই কেন্দ্রে। এক জায়গায় নাকি কেন্দ্রে পৌঁছতে না-পেরে ফিরে আসতে হয়েছে কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গে টুইট করে এনটিএ জানায়, খবরটি ভুয়ো। কী ভাবে সদর দফতর থেকে সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের উপরে নজর রাখা হচ্ছে, তার ছবিও সামনে এনেছে তারা। তবে বন্যার কারণে মহারাষ্ট্রের যে পড়ুয়ারা পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারছেন না, তাঁরা ফের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট।

কিন্তু বিরোধিতায় ঢিল দিচ্ছে না বিরোধীরা। রাহুল গাঁধীর টুইট, “ভারতের ভবিষ্যৎকে নষ্ট করছে মোদী সরকার। ঔদ্ধত্যের কারণে জেইই-নিট পরীক্ষার্থীদের সমস্যা গ্রাহ্য করেনি তারা। কানে তোলেনি এসএসসি-সহ অন্যান্য পরীক্ষার্থীর আর্জিও।”

Advertisement

আরও পড়ুন: জেইই-র প্রথম দিনের পরীক্ষায় জোর স্বাস্থ্য-বিধিতে

২০১৪ এবং ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে কমবয়সিদের পাখির চোখ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। অনেকে বলেন, সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরনো নতুন প্রজন্মের মন একেবারে গোড়ায় কব্জা করতেই ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের সূচনা। দু’বার ভোটের ফলেও স্পষ্ট যে, এই কমবয়সিদের ভোটের অনেকখানি টানতে সফল হয়েছেন মোদী।

কিন্তু বিরোধীদের আশা, বিধ্বস্ত অর্থনীতির দরুন চড়া বেকারত্ব, আর সেই সঙ্গে পরীক্ষায় জোর করে বসতে বাধ্য করার এই সিদ্ধান্ত আগামী দিনে পালের হাওয়া কেড়ে নিতে পারে। যে কারণে নোটবন্দি থেকে ঘরবন্দির কারণে কাজ হারানো নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন বিরোধীরা। করোনার মধ্যেও জেইই-মেন, ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট, সেনায় ভর্তির পরীক্ষা, এসএসসি-র বাছাই প্রক্রিয়া, সিভিল সার্ভিসের প্রাথমিক পরীক্ষায় পড়ুয়া এবং চাকরিপ্রার্থীদের বসতে বাধ্য করা নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠছে, ক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কাতেই কি নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে আজ পড়ুয়াদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপচারিতা পিছিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক? মন্ত্রীর দাবি, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণেই এই সিদ্ধান্ত।

অবশ্য ক্ষোভ রয়েছে বিরোধীদের বিরুদ্ধেও। পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ২৮ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছয় রাজ্য। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগের দিনও শুনানি হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, একেবারে শেষ বেলায় কেন আদালতে গেলেন বিরোধীরা? তবে কি এ নিছক রাজনৈতিক বিরোধিতার স্বার্থেই করা? পড়ুয়ারা কি শুধুই রাজনীতির ঘুঁটি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন