বেশি আয়ের জন্য কয়লা খনির সাড়ে তিনশো ফুট গভীরে গাঁইতি নিয়ে প্রতিদিন নেমে যেতেন বছর পঁয়ত্রিশের আমির হুসেন। শরীর ও সংসার ঠিকঠাক রাখার দোয়া চেয়ে গলায় পরেছিলেন তাবিজ। তা কখনও খুলতেন না আমির। শেষ পর্যন্ত ওই তাবিজ তাঁর জান বাঁচাতে পারল না ঠিকই, তবে এর সৌজন্যেই স্ত্রী-সন্তানরা পেতে চলেছেন সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকাটা। কারণ, অতল জলেও তাবিজটি তাঁর কণ্ঠছাড়া হয়নি।
ছবিতে আমিরের গলার তাবিজটি চোখে পড়তেই মেঘালয়ের ক্লেরিয়াট হাসপাতালের ডাক্তার ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা বুঝে গেলেন, খনিতে আটকে পড়া ১৬ জন শ্রমিকের মধ্যে প্রথম উদ্ধার হওয়া দেহটি তাঁরই। মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তীয়া হিলে খনি দুর্ঘটনার ৪২ দিনের মাথায় গত কাল নৌসেনা প্রথম দেহটি তুলে আনতে সক্ষম হয়। আজ আমিরের পরিবার দেহ শনাক্ত করেন। আমিরের প্রতিবেশী মণিরুলও ঘটনার দিন একই সুড়ঙ্গে কাজ করছিলেন। মণিরুলের ভাই মাণিক আলির আর্তি, যে সুড়ঙ্গে আমিরের দেহ মিলেছে, ভাল করে খুঁজলে সেখানেই আশপাশে মণিরুলের দেহটাও মিলবে।
দারিদ্র্যের চাপে আত্মহত্যার কথা ভাবছিলেন আমিরের স্ত্রী অভিযান। তখনই আদালতের নির্দেশে মেঘালয় সরকারের তরফে অন্তর্বতী ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা মেলে। পাওনাদাররাও অভিযানের উপরে চাপ দিচ্ছিলেন। ক্ষতিপূরণের অনেকটাই ধার মিটিয়েছে। আশা, ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও কিছু মিলবে।