যমুনার জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। ছবি: পিটিআই।
বন্যার সতর্কতা জারি করা হল দিল্লি-এনসিআরে। যমুনার জলে ইতিমধ্যেই রাজধানী এবং তার সংলগ্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিপজ্জনক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে নদীর জল। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা প্লাবিত এলাকাগুলি থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিচ্ছেন। মঙ্গলবার যমুনার জল যেমুনা বাজার এবং লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। কোথাও কোমরসমান, কোথাও হাঁটুসমান জল। ফলে আতঙ্কিত বাসিন্দারা এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় যমুনার জল বিপদসীমা অতিক্রম করায় লোকালয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। তবে এই পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। কারণ হরিয়ানায় হাকিকুণ্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে যমুনার জলস্তর আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দিল্লির নিচু এলাকাগুলিতে বন্যার প্রবল আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হতে পারে এমন জায়গাগুলিতে তাই বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যমুনার জল বাড়তে থাকায় লোহাপুলেও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিকেল ৫টার পর থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। মঙ্গলবারও বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।
ভারী বৃষ্টির জেরে সোমবার হাতিকুণ্ড বাঁধে জলের পরিমাণ ৩ লক্ষ কিউসেক ছাড়িয়ে যায়। ফলে বাঁধের ১৮টি গেট খুলে দেওয়া হয়। সোমবার সকাল পর্যন্ত হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে ২৯ হাজার ৩১৩ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে যমুনার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার বিকেলের মধ্যে দিল্লির নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়। জলস্তর কতটা বাড়ছে, তা রাতভর নজরদারি চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনগুলি। মঙ্গলবার সকাল হতেই রাজধানীর যমুনা সংলগ্ন এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ২০৫.৩৩ মিটার হল বিপদসীমা। মঙ্গলবার সকালেই দিল্লিতে যমুনার জল ২০৫.৬৮ মিটার ছুঁয়েছে। বিকেল ৫টার মধ্যে ২০৬.৫০ মিটার জলস্তর ছুঁয়ে ফেলবে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দিল্লিতে যমুনার জলস্তর ২০৭ মিটার বা তার বেশি পর্যন্ত পৌঁছোতে পারে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, যমুনা সংলগ্ন এলাকাগুলি প্লাবিত হলেও এই পরিস্থিতির আঁচ পড়বে না শহরের অভ্যন্তরে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সর্বতোভাবে প্রস্তুত প্রশাসন।
অন্য দিকে, হরিয়ানার গুরুগ্রামেও পরিস্থিতি বেশ খারাপ। সোমবার ভারী বৃষ্টি হওয়ায় বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবারও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে স্কুলগুলিকে অনলাইনে ক্লাস করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। সোমবার দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় গুরুগ্রামে। ফলে পুরো শহর থমকে যায়। ২০ কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।