প্রথম বার সাবালকের মতো বিচার হবে কিশোরের

বাবার দামি বিদেশি গাড়ি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিল দিল্লির বছর সতেরোর কিশোর। রাস্তায় এক যুবককে ধাক্কা মারে ঘণ্টায় আশি কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে চলা দুধসাদা সেই বিদেশি গাড়ি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০৪:০৩
Share:

বাবার দামি বিদেশি গাড়ি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিল দিল্লির বছর সতেরোর কিশোর। রাস্তায় এক যুবককে ধাক্কা মারে ঘণ্টায় আশি কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে চলা দুধসাদা সেই বিদেশি গাড়ি। উত্তর দিল্লির ওই দুর্ঘটনায় মারা যান বছর বত্রিশের যুবক সিদ্ধার্থ শর্মা। গাড়িটা তাঁকে প্রায় কয়েক মিটার দূরে নিয়ে গিয়ে ছিটকে ফেলেছিল। সিসিটিভিেত ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য। ধাক্কা মারার পর পরই গাড়ি ফেলে পালিয়েছিল সেই কিশোর আর তার বন্ধুরা। দিন কয়েক পরে থানায় আত্মসমর্পণ করে সে। ৪ এপ্রিলের সেই ঘটনায় এ বার আর পাঁচ জন সাবালক অপরাধীর মতোই বিচার হতে চলেছে অভিযুক্ত ওই কিশোরের। সংশোধিত জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট-এ এই প্রথম কোনও কিশোরের সাবালকের মতো বিচার হবে।

Advertisement

নির্ভয়া কাণ্ডের পরে অনেক হইচই শেষে গত বছর সংশোধন করা হয়েছিল জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন অব চিলড্রেন) অ্যাক্ট। নতুন আইনে বলা হয়, ধর্ষণ-খুনের মতো জঘন্য কিছু অপরাধে নাবালক অপরাধীকেও সাবালকের মতো বিচার করার নির্দেশ দিতে পারে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। নির্ভয়ার নাবালক ধর্ষকই তাঁর উপর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অত্যাচারগুলো চালিয়েছিল। সেই ঘটনার পরই জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট বদলানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। নতুন আইনের ২(৩৩) ধারায় বলা হয়, জঘন্য অপরাধের তালিকায় এমন কিছু অপরাধও যুক্ত যাতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার সাজা সাত বছর বা তারও বেশি কারাদণ্ড।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছিল, ওই দুর্ঘটনার দিন চারেকের মধ্যেই আঠারোয় পা দিয়েছে ওই যুবক। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, ওই পরিবারের চালক সে দিন স্টিয়ারিংয়ের পিছনে ছিলেন। সেই মতো সেই গাড়িচালককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু পরে বয়ান পাল্টান চালক। গ্রেফতার করা হয় ওই কিশোরের বাবাকেও। তবে তিনি জামিনে মুক্ত। ২৬ এপ্রিল পরীক্ষার জন্য জামিন পায় কিশোরও। প্রথমে তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(এ) ধারা (অবহেলার কারণে মৃত্যু) মামলা চালানো হচ্ছিল। গত ২৬ মে দিল্লি পুলিশ যে চার্জশিট দেয়, তাতে ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় (অনিচ্ছাকৃত খুন) মামলা রুজু করা হয়েছে। সঙ্গে জোড়া হয়েছে ২৭৯ এবং ৩৩৭ নম্বর ধারাও। যাতে দোষী সাব্যস্ত হলে দশ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে তার।

Advertisement

কাল এই মামলার শুনানির সময় সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে সওয়াল করেন, ওই কিশোরের এখন যা বয়স এবং যে ভাবে সিদ্ধার্থ মারা গিয়েছেন, তাতে এই মামলা দায়রা আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো উচিত। দু’পক্ষের সওয়ােলর পরে আজ সরকারি আইনজীবীর আবেদনে সায় দিয়েছেন জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন