অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার সভাপতি জিতনরাম মাঁঝি। আজ দুপুরে গয়ার ডুমুরিয়ার কাছে তাঁর কনভয়ে হামলা চালায় একদল উত্তেজিত জনতা। শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে দেহরক্ষীরা তাঁকে নিয়ে স্থানীয় সিআরপিএফ ক্যাম্পে ঢুকে যান। মাঁজির কনভয়ে থাকা একটি গাড়ি, পুলিশ জিপ এবং দু’টি মোটর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্য পুলিশের এডিজি (হেড কোয়ার্টার) সুনীল কুমার বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কাল ডুমুরিয়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করতে গিয়ে মাওবাদীদের হাতে খুন হন লোক জনশক্তি পার্টির নেতা সুদেশ পাশোয়ান এবং তাঁর ভাই সুনীল পাশোয়ান। জনসমক্ষে পুলিশের চর বলে তাঁদের গুলি করে খুন করা হয়। এরপরেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা মৃতদেহ দু’টি নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। গত কাল রাত থেকে অবরোধ চলছিল। আজ সেখানে যাওয়ার কথা ছিল জিতনরামের। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই বাসিন্দারা তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। হামলার জেরে পিছু হটে কনভয়। পাথরের ঘায়ে জখম জিতনরামকে কোনও রকমে তাঁর দেহরক্ষীরা স্থানীয় সিআরপিএফ ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে সেখানে থেকে সিআরপিএফ জওয়ানরা বেরিয়েও শূন্যে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশ হাল্কা লাঠিচার্জ করে জনতাকে সরিয়ে দু’টি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি মাঁঝির ওপরে হামলার ঘটনার নিন্দা করেছেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাঁকে ফোন করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির প্রেমকুমার বলেন, ‘‘জেড-প্লাস সুরক্ষার অধিকারী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর উপরে যদি এমন হামলা হয় তাহলে গোটা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। আমরা এই ঘটনার নিন্দা করছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’
হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার মুখপাত্র দানিশ রিজওয়ান বলেন, ‘‘মাঁঝিজি যাওয়ার আধঘন্টা আগে পুলিশ ওই এলাকায় দেহ উদ্ধার করার জন্য লাঠিচার্জ করে এবং গুলি চালায়। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। সে ঘটনার খবর তাঁকে দেওয়া হয়নি।’’ তিনি পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।