টহল: জঙ্গি দমন অভিযানের পরে সতর্ক নিরাপত্তা বাহিনী। কাশ্মীরের কুলগামে। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
জঙ্গি দমন অভিযানের সময়ে বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে তিন স্থানীয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের উত্তাল কাশ্মীর। জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন এক সেনাও। নিহত স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শারজিল আহমেদ খান নামে এক যুবকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আগামী রবিবার। খবর শোনার পরে আজ সকাল থেকে অজ্ঞান হয়ে রয়েছেন তাঁর বাগদত্তা।
গত কাল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ কুলগাম জেলার খুদওয়ানিতে ওয়ানি মহল্লা এলাকায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তল্লাশির সময়ে জওয়ানদের লক্ষ করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। তাতে তিন সেনা আহত হন। তাঁদের বাদামিবাগের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই গুণকারা রাও নামে এক সেনার মৃত্যু হয়। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। জঙ্গিরা পালিয়ে যায়। ঘটনার কিছু ক্ষণ পরেই তাদের খুদওয়ানিরই অন্য এলাকায় মোটরবাইক নিয়ে উল্লাস করতে দেখা যায়। বাহিনীর হাত থেকে তারা বেঁচে যাওয়ায় হইচই করতে পথে নেমেছিল স্থানীয়দের একাংশও।
সংঘর্ষের সময়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয়দের একাংশ। পাল্টা গুলি চালায় বাহিনী। তাতে প্রায় চল্লিশ জন আহত হন। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তিন জনের। বিলাল আহমেদ দার ও শারজিল আহমেদ খানের। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায় ফয়জল ইলাহি। চতুর্থ জনের পরিচয় জানা যায়নি। বিলাল, শারজিল ও ফয়জলের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।
২৪ বছরের শারজিলের বাড়ি ঘটনাস্থলের ঠিক পাশেই। বাড়ির এক তলায় বাথরুম থেকে স্নান সেরে বেরোচ্ছিলেন তিনি। তখনই রাস্তা থেকে গুলি এসে বেঁধে তাঁর বুকে। পেশায় গাড়িচালক শারজিলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আগামী রবিবার। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে আজ সকাল থেকে অজ্ঞান হয়ে রয়েছেন বাগদত্তা আরকামা আখতার। শারজিলের দাদা খালিদের কথায়, ‘‘এত দিন ওর বিয়ের আয়োজন করলাম। এখন অন্ত্যেষ্টির আয়োজন করছি।’’
সংঘর্ষে স্থানীয়দের মৃত্যুর খবর ছড়ানোর পরেই কুলগাম-সহ কাশ্মীরের কয়েকটি অংশে বিক্ষোভ শুরু হয়। কুলগাম ও অনন্তনাগের একাংশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। হরতালের ডাক দিয়েছে হুরিয়ত।